জাবিতে উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে ফের বিক্ষোভ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৩:৫৭ পিএম, ০৯ জানুয়ারি ২০২০

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে আবারও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’র ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক ঘুরে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে গিয়ে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে আন্দোলনকারীরা উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার পাশাপাশি তার অপসারণের দাবি জানান।

সমাবেশে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, দুর্নীতি করতে হলে সর্বজনের অধিকার খর্ব করতে হয়। আর সেজন্য বল প্রয়োগ করতে হয়। আবার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য দুর্নীতিবাজ গোষ্ঠীকে লালন করা হয়। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলে সরকার ক্ষুব্ধ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির অভিযোগের কোনো সুরাহা দেখতে পাচ্ছি না। এই দুইয়ের মধ্যে একটা যোগসূত্র রয়েছে। এখানে দুর্নীতি আর সন্ত্রাস একসঙ্গে চলছে। এর বিরুদ্ধে লড়াইটা অব্যাহত রাখতে হবে।

JU

নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা বলেন, গত ৫ নভেম্বরের হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক করতালি দিয়ে হামলাকারীদের উৎসাহ দিয়েছেন। আমরা শুধু একটি দুর্নীতির তদন্ত চেয়েছিলাম। সেখানে উপাচার্যের সরে গিয়ে তদন্তের সুযোগ করে দেয়া উচিত ছিল। অথচ আমাদের অহিংস আন্দোলনে হামলা করা হয়েছে। বল প্রয়োগ করে এ আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না।

ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত দে বলেন, গত ৫ নভেম্বর জাবির ইতিহাসের অন্যতম কালো দিন। উপাচার্য ও তার সমর্থকদের মদদে ছাত্রলীগ সেদিন আমাদের ওপর নির্মম হামলা চালিয়েছিল। কিন্তু এই হামলারও বিচার হয়নি। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও দুর্নীতির দায়ে উপাচার্যকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।

ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সদস্য রকিবুল হক রনির সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তারেক রেজা, ছাত্র ইউনিয়নের কার্যকরী সদস্য মিখা পীরেগু, ছাত্র ফ্রন্টের সহ-সভাপতি সম্পদ অয়ন মারান্ডি, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম পাপ্পু, ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সদস্য খালিদ মাহমুদ তন্ময় প্রমুখ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে প্রায় তিন মাস ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। এই দাবিতে বিক্ষোভ, ধর্মঘটের পর গত ৪ নভেম্বর উপাচার্যের বাসভবন অবরুদ্ধ করেন তারা। পরদিন ৫ নভেম্বর ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা তাদের পিটিয়ে সরিয়ে দেন। এ অবস্থায় গত ৫ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘ এক মাস পর গত ৫ ডিসেম্বর থেকে আবার ক্যাম্পাস সচল হয়। তবে উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

ফারুক হোসেন/আরএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।