ঢাবির ছাত্রী ধর্ষণে মাইম অ্যাকশনের ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছেন তরুণ-তরুণীরা। প্রত্যেকের মুখ সাদা পাউডারে মাখা, হাতে হাত মোজা। কারো গায়ে সাদা-কালোর সমন্বয়ে পোশাক, আবার কারো গায়ে শুধুই কালো পোশাক। তবে সবার উদ্দেশ্য একটাই, ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিবাদ জানানো।
ব্যতিক্রমীভাবে প্রতিবাদ জানানো এসব তরুণ-তরুণী সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তবে তাদের অন্য আরও একটি পরিচয় রয়েছে। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইম অ্যাকশন নামে একটি মুখাভিনয় সংগঠনের সদস্য।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শুধু রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে নয়, হাকিম চত্বর, টিএসসির সামনে দাঁড়িয়েও তাদের প্রতিবাদ জানাতে দেখা যায়।
রাজু ভাস্কর্যের সামনে একই দাবিতে মানববন্ধন করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। মানববন্ধন শেষে ছাত্রলীগের নেতকর্মীরা চলে গেলে মাইম অ্যাকশনের সদস্যরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নেন।
মাইম হলো মুখাভিনয়। কালো ড্রেস পরে মুখে সাদা মেকআপ দিয়ে নানা অঙ্গভঙ্গি করে মানুষের সামনে কোনো একটি গল্প তুলে ধরাকে বলা হয় মাইম। মুখাভিনয় একটি প্রাচীন শিল্প মাধ্যম, যা যুগ যুগ ধরে বিনোদনের মধ্য দিয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, রাজধানীর মধ্যে কুর্মিটোলায় ঢাবি শিক্ষার্থী ধর্ষণসহ দেশের সব ধর্ষণের প্রতিবাদে তারা রাজপথে দাঁড়িয়েছেন। ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
‘তনু, তানিয়া, নুসরাত... এরপর কে?’, ‘ধর্ষকের ** কেটে দাও’, ‘নো মার্সি টু রেপিস্ট’, ‘আমার বোন ধর্ষিতা কেন? বাংলাদেশ জবাব চাই’, ‘হু ইজ নেক্সট’ প্রভৃতি লিখা প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমেও মুখাভিনয় শিল্পিরা তাদের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
রোববার (৫ জানুয়ারি) রাতে কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ক্ষণিকা’ বাস (ঢাবি-টঙ্গী রুট) থেকে কুর্মিটোলায় নামলে তাকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। ধর্ষণের ঘটনায় ছাত্রীর বাবা ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে এবং ধর্ষকের বিচার দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
জেইউ/আরএস/জেআইএম