আবরার হত্যার প্রতিবাদে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ (২১) হত্যার প্রতিবাদে ও খুনিদের বিচারের দাবিতে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার বিকেল পৌনে ৩টা থেকে সোয়া ৩টা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’; ‘আবরার হলো আমার ভাই, খুনিদের বিচার চাই’; ‘শিক্ষা-সন্ত্রাস, একসঙ্গে চলবে না’ স্লোগান দিতে থাকেন।
সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে আবরার ফাহাদের খুনিদের বিচারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হল মোড়ে জড়ো হতে থাকেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা সব ছাত্র হল ঘুরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রধান ফটকের সামনের রাস্তা অবরোধ করেন। এতে রাস্তার দুপাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে এ সময় শিক্ষার্থীদের অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি পরিবহনগুলো পার করে দিতে দেখা গেছে।
পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ রাস্তায় আটকে আছেন শুনে তাকে সম্মান জানিয়ে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন।
তারা প্রকৃত খুনিদের গ্রেফতারে আন্দোলনকারীরা ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খুনিরা গ্রেফতার না হলে মঙ্গলবার থেকে লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেয় আন্দোলানকারীরা।
এদিকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলাকালে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আরিফ তাদের সঙ্গে অসদাচরণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি আন্দোলনকারীদের ‘দেখে নেয়ার’ হুমকি দেন বলে জানা গেছে।
সড়ক অবরোধের একপর্যায়ে সেখানে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নাসিরুদ্দিন আজহারী ও ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আরিফ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওসি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। একপর্যায়ে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন এবং আন্দোলনকারীদের দেখে নেয়ার হুমকি দেন।
আন্দোলনকারীরা ওসিকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘দায়িত্বশীল পদে থেকেও তিনি (ওসি) কীভাবে ব্যবহার করতে হয় তা জানেন না। একজন ছাত্রের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করার কোনো অধিকার তার নেই। তিনি আমাদের দেখে নিতে চেয়েছেন! কী দেখে নেবেন? উনি দেখে নেয়ার কে? তাকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানাই।’
তবে ওসি জাহাঙ্গীর আরিফ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘রাস্তা বন্ধ থাকলে জনদুর্ভোগ বাড়ে, এ কারণে আমি ছাত্রদের বুঝিয়ে রাস্তা ক্লিয়ার করতে বলেছি।’
সহকারী প্রক্টর নাসিরুদ্দিন আজহারী বলেন, এটা একটা অরাজনৈতিক আন্দোলন। একটা ছাত্রকে নির্মমভাবে মেরে ফেলা হয়েছে। ছাত্ররা বিক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলন করছে। ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্রলীগের কর্মীরাসহ সাধারণ ছাত্ররা এ আন্দোলন করছে। তাদের দাবির সঙ্গে আমিও একমত।
ফেরদাউসুর রহমান সোহাগ/এমবিআর/জেআইএম