জাবি উপাচার্যকে আবারও কালো পতাকা প্রদর্শন

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৫:৪৭ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে ‘দুর্নীতিবাজ’ অ্যাখ্যা দিয়ে চলমান ভর্তি পরীক্ষায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা এবং আগামী ১ অক্টোবরের মধ্যে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের দাবিতে আবারও কালো পতাকা প্রদর্শন করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সামনে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়নের জন্য ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প থেকে তিনি ছাত্রলীগকে দুই কোটি টাকা ‘ঈদ সালামি’ হিসেবে দিয়েছেন। এ কারণে উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন তারা এবং আগামী ১ অক্টোবরের মধ্যে তাকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে চলমান ভর্তি পরীক্ষায় জাবির সব ভবনে উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।

এদিকে আন্দোলন উপেক্ষা করে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম সোমবার দুপুরে পদার্থবিজ্ঞান ভবনের ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।

কর্মসূচি পালনকালে দর্শন বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য যে অবস্থান নিয়েছেন তা সারাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ভর্তি পরীক্ষা চলছে বলে আমরা নমনীয়ভাবে কর্মসূচি পালন করছি। এটাকে দুর্বলতা ভাববেন না। ১ অক্টোবরের মধ্যে আপনি সসম্মানে পদত্যাগ না করলে বিশ্ববিদ্যালয় অচলাবস্থার দায় নিয়ে আপনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হবেন।’

JU-2

বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের জাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন শিশির বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আপনাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন। সেই ভয়ে শেষ সময়ে গোপনে পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলেন। আন্দোলনকারীরা আপনাকে সাতদিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন। তিনদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও আপনার অবস্থান পরিষ্কার করেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এর উচিত জবাব দেবেন।

কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সোহেল রানা, নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন, অধ্যাপক কামরুল আহসান, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, সহযোগী অধ্যাপক নাজমুল হাসান তালুকদার, অধ্যাপক তারেক রেজা প্রমুখ।

এছাড়া জাবি সাংস্কৃতিক জোট, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে জাবির উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অপরিকল্পনার অভিযোগ এনে তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। চাপের মুখে গত ১২ সেপ্টেম্বর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে বাধ্য হন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ সময় আন্দোলনকারীদের দুটি দাবি মেনে নেন তারা। তবে দুর্নীতির বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়। পরে ১৮ সেপ্টেম্বর দু’পক্ষের মধ্যে আবারও আলোচনা হয়। কিন্তু সেই আলোচনাও ফলপ্রসূ না হওয়ায় আগামী ১ অক্টোবরের মধ্যে উপাচার্যকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা।

এদিকে আলোচনা শেষে সেদিন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কিংবা রাষ্ট্রপতি যদি নির্দেশ দেন তবে সরে যাব। যদি তারা নির্দেশ না দেন তাহলে গালমন্দ খেয়েও থেকে যাব। হয়তো তাদের আন্দোলন আরও দীর্ঘায়িত হবে। কিন্তু নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আমি দায়িত্ব পালন করে যাব।

ফারুক হোসেন/এমএমজেড/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।