কমিশন কেলেঙ্কারি, জাবি উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৬:০০ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে ছাত্রলীগকে টাকা দেয়ার ঘটনা তদন্তের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার দুপুর ১টায় ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি অমর একুশে, নতুন কলাভবন, পুরাতন প্রশাসনিক ভবন হয়ে মুরাদ চত্বরে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

সমাবেশ থেকে উপাচার্যের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের দাবি জানানো হয়। অন্যথায় আন্দোলনের মাধ্যমে দুর্নীতির বিষয়টি তদন্তে বাধ্য করা হবে। পাশাপাশি ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক উপাচার্যের কাছে যে চাঁদা দাবি করেছেন তা এতদিন কেন গোপন রাখা হয়েছে তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত দের সঞ্চালনায় সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সদস্য রাকিবুল রনি বলেন, উপাচার্য কোনো তদন্তের দিকে না গিয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করছেন। তিনি একবার বললেন শোভন-রাব্বানী ৪-৬ পারসেন্ট চাঁদা দাবি করেছেন। আবার গতকাল চ্যানেল আইকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, তাদের সঙ্গে টাকার বিষয়ে কোনো কথাই হয়নি। তার এরকম মিথ্যাচার বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ক্ষুণ্ন করছে। উপাচার্যকে তদন্ত করে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে হবে।

ছাত্রফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক শোভন রহমান বলেন, উপাচার্যের কাছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ টাকা দাবি করেছে সেটা তিনি এতদিন কেন প্রকাশ করেননি। আমরা এর সঠিক উত্তর চাই। আপনি এসব বিষয় আমাদের সামনে প্রকাশ করুন।

বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ জাবি শাখার মুখপাত্র খান মুনতাসির আরমান বলেন, জাহাঙ্গীরনগরের এই দুর্নীতির করাল গ্রাস দেশের সবাইকে ছুঁয়ে গেছে। উপাচার্য, ছাত্রলীগ আপনার কাছে টাকা চেয়েছে এই খবর কেন এতদিন প্রকাশ করেননি? আমরা যখন আমাদের ন্যায্য দাবির জন্য আন্দোলন করি, তখন আপনি আমাদের নামে মামলা করেন। আপনাকে বহিরাগত কেউ টাকার জন্য চাপ দিল তবু আপনি থানায় কোনো অভিযোগ করেননি। এতে বোঝা যায়, আপনি নিজেও একজন দুর্নীতিবাজ। তাই এই দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত চাই আমরা।

এদিকে, উপাচার্যের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগকে টাকা দেয়ার অভিযোগের তদন্তের বিষয়ে আগামী বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত সময় নিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর আগে আন্দোলনকারীদের কোনো কর্মসূচি পালনের কথা না থাকলেও, ‘উপাচার্য উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ থেকে শাখা ছাত্রলীগকে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা দিয়েছেন’ শোভন-রাব্বানীর এমন বক্তব্যের পর রোববার ফের এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

প্রসঙ্গত, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অপরিকল্পনার অভিযোগে তিন দফা দাবিতে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গত বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আলোচনায় দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তের দাবি বাদ রেখে অন্য দুটি দাবি মেনে নেয় প্রশাসন। দুর্নীতির অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্তের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে আগামী বুধবার পর্যন্ত সময় নেয় প্রশাসন। এ নিয়ে বুধবার আবারও আলোচনা হবে।

এএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।