ছাত্রলীগকে টাকা দেয়ার অভিযোগ তদন্তে সময় নিলেন জাবি উপাচার্য

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০২:৪৯ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অপরিকল্পনার অভিযোগে তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আলোচনায় তিন দফার প্রথম ও তৃতীয় দাবি মানা হলেও দ্বিতীয় দফার সিদ্ধান্ত জানায়নি প্রশাসন।

দাবি অনুযায়ী আলোচনায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে- বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের পাশের তিনটি হলের দুটি হল অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হবে এবং একটি হলকে পশ্চিম দিকে পিছিয়ে পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। মহাপরিকল্পনা পুনর্বিন্যাসের দাবিও মেনে নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে মহাপরিকল্পনা পর্যালোচনার জন্য বর্তমান বিশেষজ্ঞ কমিটি পুনর্গঠন করা হবে। প্রকল্পের কাজের গুণগত মান নিরীক্ষা করার জন্য একটি বিশেষায়িত কমিটি গঠন করা হবে। প্রকল্পের ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে কমিটিকে নির্দিষ্ট সময় পরপর অগ্রগতি জানানো হবে।

তবে এ আলোচনায় আন্দোলনকারীদের দ্বিতীয় দফার দুর্নীতির বিষয়ে তদন্তের দাবির কোনো সুরাহা হয়নি। প্রকল্পের টাকা থেকে ছাত্রলীগকে দুই কোটি টাকা দেয়ার অভিযোগের তদন্তের দাবির ব্যাপারে আইনি পরামর্শের জন্য উপাচার্য তিন কর্মদিবস সময় নিয়েছেন। সে অনুযায়ী আগামী বুধবার এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ফের আলোচনায় বসবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনে আলোচনা শুরু হয়। প্রায় পাঁচ ঘন্টা আলোচনা শেষে রাত ৯টায় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আমির হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নুরুল আলম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) রহিমা কানিজ, প্রকল্প পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) প্রকৌশলী নাছির উদ্দিন এবং নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) আহসান হাবিব অংশ নেন।

অন্যদিকে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ এর ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ২২ সদস্যের প্রতিনিধি দল আলোচনায় অংশ নেন। আলোচনায় অংশ নেয়া শিক্ষকরা হলেন- ভুগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, রায়হান রাইন, এ.এস.এম আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দীন, অধ্যাপক খবির উদ্দিন এবং বাংলা বিভাগের শামীমা সুলতানা ও তারেক রেজা।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী জয়, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম অনিক, কার্যকরী সদস্য রাকিবুল হক, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম পাপ্পু, প্রচার সম্পাদক মারুফ মোজাম্মেল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দিদার, সাংগঠনিক সম্পাদক শোভন রহমান, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) জাবি শাখার সভাপতি মাহাথির মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত দে, দফতর সম্পাদক রেবেকা আহমেদ এবং বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ জাবি শাখার মুখপাত্র খান মুনতাসির আরমান, যুগ্ম আহ্বাায়ক জয়নাল আবেদীন শিশির ও আরিফুল ইসলাম আলোচনায় অংশ নেন।

এর আগে তিন দফা দাবিতে গত ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ সেপ্টেম্বর টানা তিনদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। পরে ৭সেপ্টেম্বর পূর্বঘোষিত আলোচনার দিন সকালে আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের এক নেতা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করলে সেদিনের মতো আলোচনা ভেস্তে যায়।

তিন দফা দাবিতে গত ২৫ আগস্ট থেকে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ এর ব্যানারে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশ।

আরএআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।