ডাকসু নির্বাচনের পাঁচ মাসেও বাজেট হয়নি হল সংসদে

তিন দশক পর চলতি বছরের ১১ মার্চ নির্বাচনের মাধ্যমে সচল হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ। নির্বাচনের পর ২৩ মার্চ দায়িত্ব গ্রহণের মাধ্যমে অনানুষ্ঠানিক কার্যক্রমও শুরু করেন নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। তবে অভিষেকের পাঁচ মাস হলেও ১৮টি হলের মধ্যে ১৬টিতেই এখন পর্যন্ত বাজেট হয়নি। যে দুটি হলে বাজেট হয়েছে তাও নগণ্য। ফলে শিক্ষার্থীবান্ধব বিভিন্ন কাজের উদ্যোগ নিলেও অর্থ সঙ্কটে তা বাস্তবায়ন করতে পারছেন না হল প্রতিনিধিরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল ও বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল ছাড়া কোনো হলেই বাজেট হয়নি। দুটি হল সংসদে ৪০ হাজার টাকা করে বাজেট হয়েছে। এর মধ্যে কবি সুফিয়া কামাল হলে বাজেট পাস হলেও বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলে এখনো বাজেট পাস হয়নি। তবে যে টাকা বাজেট হয়েছে তা দিয়ে এক বছরে কোনো একজন সম্পাদকের পক্ষেও প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।

বার্ষিক ৬০ টাকা হারে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেয়া হল ইউনিয়ন ফি সংসদ তহফিলে জমা হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। উল্টো লক্ষ্য করা গেছে ভিন্ন চিত্র। কবি সুফিয়া কামাল হলে বর্তমান আবাসিক ও অনাবাসিক শির্ক্ষাথীদের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার ৩০০। সে হিসাবে হলের সাধারণ বাজেটের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। এর বাইরেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন প্রোগ্রামের (খেলাধুলা, বিতর্ক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড) জন্য আলাদা টাকা দেয়া হয়।

বাজেট থেকে আরও ১ লাখ ৫৮ হাজার টাকা কম দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কবি সুফিয়া কামাল সংসদের জিএস মনিরা শারমিন বলেন, প্রভোস্ট ম্যাম আমাদের বলেছেন, সব হল সংসদের জন্যই ৪০ হাজার টাকা দিয়ে  বাজেট করতে হবে। এর বাইরে জরুরি প্রয়োজনে হলের নিজস্ব ফান্ড থেকে হল প্রশাসন কিছু টাকা দেবে।

এ বিষয়ে কথা বলতে কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সাবিতা রিজওয়ানা চৌধুরীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

হল সংসদের বাজেট সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপার্চায অধ্যাপক আখতারুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, ছাত্রদের হল ইউনিয়ন ফি দিয়েই হল সংসদের বাজেট হবে। হল সংসদের বাজেটের পরিমাণ হলের ছাত্রসংখ্যার ওপর নির্ভর করে।

তাহলে পাঁচ মাসেও কেন হল সংসদের বাজেট হয়নি -এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপার্চায বলেন, এটা হল প্রভোস্টদের দায়িত্ব। এটা আরও আগেই করা উচিত ছিল। তারা কেন করল না তার জন্য তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। যেহেতু হল সংসদের মেয়াদ আর বেশিদিন নেই, সেহতেু আমরা দ্রুতই হল সংসদকে তাদের বাজেট বুঝিয়ে দেব।

এ প্রসঙ্গে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের অনেক দিনের স্বপ্ন ডাকসুকে কলঙ্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে এক বিশেষ শ্রেণির হাতে তুলে দিয়েছে। আমরা ডাকসুতে কোনো ধরনের কাজ করতে পারিনি। হল সংসদগুলো যেন কোনো কাজ করতে না পারে সে জন্য প্রশাসন পাঁচ মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও বাজেট দেয়নি।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী হল সংসদের মেয়াদ এক বছর। সে অনুযায়ী হল সংসদের মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের মার্চ মাসের শেষ দিকে। বাজেট নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় হল সংসদ নেতা ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে দেখা দিয়েছে হতাশা।

আরএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।