মিষ্টি নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের গোলাগুলিতে আহত ৬০

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৮:৩০ পিএম, ০৩ জুলাই ২০১৯

মিষ্টি খাওয়া নিয়ে কথাকাটাকাটির জেরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন।

বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় দুই হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে শিক্ষার্থী, পুলিশ, সাংবাদিক ও শিক্ষক আহত হয়েছেন।

আহতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। প্রায় ১৪ জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন এনাম মেডিকেলের ডিউটি অফিসার বৃষ্টি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলার দোকানে মিষ্টি খেতে যান বঙ্গবন্ধু হলের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী দ্বীপ বিশ্বাস (নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ) ও আলিফ হাসান দীপু (বাংলা বিভাগ)।

এ সময় মওলানা ভাসানী হলের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ কর্মী সৌরভ কাপালীর (ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ) সঙ্গে ধাক্কা লাগে দ্বীপের। এ নিয়ে কথাকাটাকাটির জেরে দ্বীপ ও দীপুকে চড়-থাপ্পড় দেয় সৌরভ।

খবর পেয়ে বঙ্গবন্ধু হল থেকে শতাধিক শিক্ষার্থী লাঠি, চাপাতি, রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বটতলা এলাকায় আসে। একই সময় ভাসানী হলের শিক্ষার্থীরা লাঠি, চাপাতি ও রামদা নিয়ে বটতলায় উপস্থিত হলে সংঘর্ষ শুরু হয়।

Ju-versity-(1).jpg

এ সময় উভয় হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়। ঘটনার পরপর সাংবাদিকদের কাছ থেকে খবর পেয়ে দুজন সহকারী প্রক্টর ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা সেখানে গেলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে। শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকও সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি থামাতে ব্যর্থ হন। তাদের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষ চালিয়ে যায়।

সংঘর্ষ চলাকালে বঙ্গবন্ধু হলের শিক্ষার্থীদের প্রায় ১৫ রাউন্ড গুলি ছোড়ার শব্দ শোনা যায়। বিকেল ৪টার দিকে আশুলিয়া থানা পুলিশ বটতলায় উপস্থিত হয়ে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

শিক্ষার্থীদের ছোড়া ইটের আঘাতে আহত হন সহকারী প্রক্টর মহিবুর রৌফ শৈবাল ও বঙ্গবন্ধু হলের ওয়ার্ডেন মেহেদী ইকবাল। সংঘর্ষের ভিডিও ধারণ করায় দৈনিক সংবাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি জোবায়ের কামাল মারধরের শিকার ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি রিজু মোল্লা লাঞ্ছিত হন।

বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের কর্তব্যরত চিকিৎসক লিখন চন্দ্র বালা বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৬০ জন শিক্ষার্থী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, শিক্ষার্থীদের আমরা হলে ফিরিয়ে দিয়েছি। যেকোনো পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। শিক্ষার্থীদের কাছে থাকা অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

হাফিজুর রহমান/এএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।