ইবিতে শিক্ষক নিয়োগে ১৮ লাখ টাকার চুক্তি, দুই শিক্ষক বরখাস্ত
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ফের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য সংক্রান্ত দুটি অডিও ফাঁস হয়েছে। অডিওতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রুহুল আমিন ও ইলেক্ট্রিকাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রহিম এক নিয়োগপ্রার্থীর সঙ্গে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেয়ার চুক্তি করেন।
শুক্রবার একটি জাতীয় দৈনিকে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি আমলে নিয়ে উপাচার্য ড. অধ্যাপক হারুন উর রশিদ আসকারী অভিযুক্ত ওই দুই শিক্ষককে তাৎক্ষণিক বরখাস্ত করেন।
এদিকে আগামীকাল ২৯ জুন (শনিবার) অনুষ্ঠিতব্য ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ড স্থগিত করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ।
এদিকে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার জরুরী সভা আহ্বান করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। সভায় এ নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িত সকলকে সাময়িক বরখাস্ত করে শক্তিশালী নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানানো হয়। বিষয়টি রেজুলেশনভুক্ত করে উপাচার্যের নিকট হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক কামাল উদ্দিন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী বলেন, আমরা সব সময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে। পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হওয়ার পরে বিষয়টির সঙ্গে ওই দুই শিক্ষকের সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছি। অভিযুক্তদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সঙ্গে নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করা হয়েছে। দ্রুতই একটি শক্ত তদন্ত কমিটি করা হবে।
জানা যায়, শুক্রবার একটি জাতীয় দৈনিকে দুই শিক্ষকের নিয়োগ বাণিজ্যের অডিও ফাঁসের খবর প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদে শিক্ষক রুহুল আমিন এবং আব্দুর রহিমের সঙ্গে ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ প্রার্থী আরিফের আট মিনিট পঁয়ত্রিশ সেকেন্ডের কথোপকথন হয়।
কথোপকথনে তাদের মধ্যে প্রভাষক নিয়োগে ১৮ লাখ টাকার চুক্তি হয়। এর মধ্যে নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডের সভা হওয়ার আগে দিতে হবে ১০ লাখ টাকা। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী সভা সিন্ডিকেটে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পেলে বাকি ৮ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের নিয়োগ বোর্ড নিয়ে এর আগেও বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছিল। এই একই বোর্ড নিয়ে ২০১৭ সালের ২ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে ‘থ্রি ফার্স্ট ক্লাসে ১৫ ফোরে ১২ লাখ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তখন বিভাগের সভাপতি ছিলেন এই রুহুল আমিন। বোর্ড অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই তার সঙ্গে নিয়োগ বাণিজ্য নিয়ে এশিয়ান ইউনিভার্সিটির এক বন্ধুর সঙ্গে কথপোকথনের ১০ মিনিটের অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়। এরপর বোর্ড স্থগিত করে কর্তৃপক্ষ। সেই অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে লঘু দণ্ড দেয় রুহুল আমিনকে।
ফেরদাউসুর রহমান সোহাগ/আরএআর/এমকেএইচ