পাল্টা সমালোচনায় শিক্ষকরা
এবার অর্থমন্ত্রীকে এক হাত নিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ‘দেশের সবচেয়ে বেশি শিক্ষিত জনগোষ্ঠী জ্ঞানের অভাবে আন্দোলন করছে।’ এমন বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। মঙ্গলবার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শেষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে শিক্ষরা অর্থমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমোলচনা করেন।
শিক্ষকরা বলেন, আমরা পরিতাপের সঙ্গে লক্ষ করেছি যে অর্থমন্ত্রী মঙ্গলবার সংবাদ মাধ্যমে শিক্ষকদের বিষয়ে কিছু বিরূপ মন্তব্য করেছেন। যা শুধু অনভিপ্রেতই নয় অসংলগ্নও বটে। অর্থমন্ত্রী অতীতে অন্যান্যদের ক্ষেত্রেও বিরূপ মন্তব্য করেছেন। এসবের মাধ্যমে তিনি জাতির কাছে নিজেকে ইতোমধ্যে হাস্যকর করে তুলেছেন। হলমার্ক কিংবা বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি তার কাছে কোনো ঘটনাই না।
বিবৃতিতে তারা বলেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের পদোন্নতি নিয়ে মন্তব্য করেছেন। বলাবাহুল্য, সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পদোন্নতি হয়ে থাকে; যে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহের অনুমোদন রয়েছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, উচ্চশিক্ষার উৎকর্ষ সাধন ও প্রকৃত মানবসম্পদ সৃষ্টি এবং শিক্ষকদের মান উন্নয়নের জন্য শিক্ষকরা যে কোনো গঠনমূলক প্রস্তাব মেনে নেবেন। কিন্তু গণমাধ্যমে মন্ত্রীর কথায় মনে হয়েছে তিনি জনগণের প্রতিনিধি নন। আমলাদের প্রতিনিধি। সুতরাং তার কাছ থেকে শিক্ষকরা সুবিচার পাবেন বলে মনে হচ্ছে না।
শিক্ষকদের সম্পর্কে অর্থমন্ত্রীরই জ্ঞানের অভাব রয়েছে মন্তব্য করে বিবৃতিতে বলা হয়, বস্তুতপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষক ও শিক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কে তার জ্ঞানের অভাবের কারণেই তিনি এরূপ দায়িত্বহীন মন্তব্য করেছেন। শিক্ষকদের পদোন্নতিকে ঘিরে তিনি যখন দুর্নীতির কথা বলেন, অন্যদিকে হলমার্ক কেলেঙ্কারিকে তিনি কিছুই মনে করেন না এবং বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি অত্যন্ত হালকাভাবে দেখেন।
আন্দোলন আরো কঠোর করার ইঙ্গিত দিয়ে শিক্ষকরা বলেন, ঘোষিত বেতন কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের চার দফা দাবির কোনোটিই গ্রহণ করা হয়নি, এমনকি দাবি পূরণের বিষয়ে আমরা এখনো সুনির্দিষ্ট কোনো দিকনির্দেশনাও দেখছি না। এমতাবস্থায় শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া অনতিবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য আমরা অনুরোধ করছি। অন্যথায় শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি পূরণে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দুপুরে অর্থমন্ত্রণালয়ে এক বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনরত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জ্ঞানের অভাব রয়েছে। শিক্ষকরা তাদের পদোন্নতির নিয়মটি নিজেরা তৈরি করে নিয়েছেন। তাই তাদের পদোন্নতি ব্যবস্থার সংস্কার করা হবে। পে-স্কেলে কি আছে, তারা না বুঝেই আন্দোলন করছেন। তারা সবাই অধ্যাপক হতে চান, তাদের দুনীতির এ চর্চা বন্ধ করা উচিত।
এমএইচ/এএইচ/আরআইপি