‘নট ফর সেল’ অথচ বিক্রি হচ্ছে ফার্মেসিতে!

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৯:৩৫ পিএম, ০৬ মে ২০১৯

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নির্ধারিত বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের বিনামূল্যের ওষুধ বিক্রি হচ্ছে নীলক্ষেতের একটি ফার্মেসিতে। এমন অভিযোগে সোমবার মামুন ফার্মেসি নামের ওই দোকানে যান ডাকসুর সদস্য তানভীর হাসান সৈকত। এসময় তিনি ঘটনার প্রমাণ পান। ওষুধসহ ফার্মেসি মালিককে নিয়ে আসেন প্রক্টর অফিসে। ফার্মেসি মালিকের স্বীকারোক্তিতে মেডিকেল সেন্টারের এক অ্যাম্বুলেন্স চালকের সম্পৃক্ততার অভিযোগ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় ফার্মেসি মালিককে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। আমরা ওই ফার্মেসি থেকে কিছু কাগজও জব্দ করেছি। আমরা জানার চেষ্টা করছি ঢাকা ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারের ওষুধ নীলক্ষেতের ফার্মেসিতে কিভাবে গেল।

তিনি আরও বলেন, আমরা এর সমাধানে অধিকতর তদন্তের দিকে যাবো। ঘটনা তদন্তে মেডিকেল সেন্টারের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. হাফেজা জামানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

জানা গেছে, রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি ফেসবুক গ্রুপে গরিব শাহ নামে একজন পোস্ট করে বলেন, তিনি রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নীলক্ষেতের এক ফার্মেসিতে গিয়ে দোকানদারকে পেটের ব্যাথার জন্য ওষুধ দিতে বলেন। এসময় তিনি ওই ওষুধ (জিফ্লক্স-৫০০) ও আরও কিছু ওষুধ দেন। প্রতি পিস ১৫ টাকা করে ৪ পিস জিফ্লক্স-৫০০ ওষুধের দাম রাখা হয় ৬০ টাকা।

তিনি লিখেন, ওষুধটি শুধুমাত্র ঢাবির মেডিকেলেই পাওয়ার কথা। কারণ ওষুধটির গায়ে স্পষ্ট করে লেখা আছে ‘নট ফর সেল, অনলি ফর ঢাকা ইউনিভার্সিটি’। তিনি এ বিষয়ে ডাকসু নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এরপর ডাকসু সদস্য তানভীর হাসান সৈকত ঐ ফার্মেসিতে ছুটে যান।

তিনি বলেন, নীলক্ষেতের একটি ফার্মেসিতে ঢাবি মেডিকেল সেন্টারের ওষুধ বিক্রি হয় এমন খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে জিফ্লক্স-৫০০ নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলমারা ওষুধ কিনি। মালিকের কাছে সিলমারা ওষুধ কোথায় পেয়েছেন জানতে চাইলে তিনি প্রথমে ক্ষমা চান এবং অনেক পীড়াপীড়ির পর স্বীকার করেন মেডিকেলের অ্যাম্বুলেন্স চালক আব্দুল মালেকের কাছ থেকে তিনি এই ওষুধ কিনেছেন। এরপর সৈকত ফার্মেসির মালিক হানিফ ও অ্যাম্বুলেন্স চালক আব্দুল মালিককে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে হাজির করেন। প্রক্টর ওষুধগুলো জব্দ করেন। এরপর হানিফকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। আটকের আগে ফার্মেসির মালিক হানিফ বলেন, ঢাবির মেডিকেল সেন্টারের অ্যাম্বুলেন্স চালক আব্দুল মালেকের কাছ থেকে ছয় পাতা জিফ্লক্স ৫০০ ওষুধ কিনে তিনি তা বিক্রি করেন। তবে বিক্রি অযোগ্য এমন ওষুধ বিক্রির জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।

ওষুধ বিক্রির অভিযোগের বিষয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালক আব্দুল মালেক জানান, তিনি মেডিকেল সেন্টারের ডাক্তার আরিফুর রেজা সিকদারের কাছ থেকে প্রেসক্রিপশন করে ছয় পাতা ওষুধ নেন।

তবে ডা. আরিফুর রেজা সিকদার কাউকে ছয়পাতা জিফ্লক্স ওষুধ প্রেসক্রাইব করেননি বলে জানান।

এমএইচ/এসএইচএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।