নুসরাতকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, মামুন চাকরিচ্যুত

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৩:১২ পিএম, ১৩ এপ্রিল ২০১৯

যৌন হয়রানির অভিযোগ করায় আগুনে পুড়িয়ে মারা ফেনীর মাদরাসাছাত্রী ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে নিয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর মন্তব্য করায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী মামুন বিল্লাহ চাকরিচ্যুত হয়েছেন। তবে এ নিয়ে একেক সময় সাংবাদিকদের একেক রকম বক্তব্য দেয়ায় মামুন বিল্লাহর চাকরি নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে মামুন বিল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, এসিআই মোটরস’র হয়ে বরিশালে সাতদিন আগে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। আমাকে মৌখিকভাবে চাকরিতে নেয়া হয়। ফেসবুকে কমেন্টের কারণে আমাকে চাকরি থেকে বাদ দেয়া হয়।

যদিও শুক্রবার বিকেলে মামুন বিল্লাহ বলেছিলেন, আগে তিনি একটা চাকরি করতেন। তবে কিছুদিন ধরেই বেকার।

মাদরাসাছাত্রী নুসরাতকে নিয়ে আপত্তিকর কমেন্টের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমেন্টের ঘটনার আগের দিন থেকে আমার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়ে আছে। এখনও সেটি ওপেন করতে পারিনি। কমেন্টের ঘটনার পর বরিশালের কোতোয়ালি থানায় জিডি করেছেন তিনি। জিডি নং- ৬৩০।

এর আগে নুসরাতকে নিয়ে ঘৃণ্য মন্তব্যের অভিযোগ ওঠে মামুন বিল্লাহ নামে এই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০১৭ সালে অনার্স শেষ করেছেন। তিনি মাস্টার্স এখনও করেননি বলে জানা গেছে। তার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার মিস্ত্রিপাড়া গ্রামে।

একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিহত নুসরাতের বিষয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করে তা ফেসবুক পেজে শেয়ার করে। সেখানে মামুন বিল্লাহ ফেসবুক আইডি থেকে আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়। এরপর অনেকেই তাকে ‘ভবিষ্যৎ ধর্ষক’ হিসেবে চিহ্নিত করে তার শাস্তির দাবি করে ফেসবুকে পোস্ট দেন।

উল্লেখ্য, নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে ওই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা করেন।

এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেয়া হচ্ছিল। এর মধ্যে ৬ এপ্রিল (শনিবার) সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এ সময় তাকে কৌশলে একটি বহুতল ভবনে ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখানে তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।

ঘটনার চারদিন পর বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত। বৃহস্পতিবার গ্রামের বাড়িতে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

সালমান শাকিল/আরএআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।