ইবির এক শিক্ষক চাকরিচ্যুত, দুই শিক্ষকের পদ অবনমন
দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত থাকায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ২৪৪ তম সিন্ডিকেট সভায় এক শিক্ষককে চাকরিচ্যুতসহ একজনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠনো হয়েছে। একই সঙ্গে সভায় আরও দুই শিক্ষককের পদ অবনমন করা হয়েছে। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপাচার্যের বাসভবনে এ সিন্ডিকেট সভা শুরু হয়ে চলে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত।
সিন্ডিকেট সভা সূত্রে জানা যায়, ইনফরমেশন কমিউনিকেশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তারিকুজ্জামানকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন কানাডায় অবস্থান করায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ জানান, চাকুরিচ্যুত ওই শিক্ষককে ক্লাসে নিয়মিত হওয়ার জন্য বারবার চিঠি পাঠিয়েও কোনো সদুউত্তর না পাওয়ায় চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। একই সঙ্গে সিন্ডিকেট সভায় আইন বিভাগের অধ্যাপক গাজী ওমর ফারুককে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন কানাডা প্রবাসী এবং সেখানকার নাগরিক। তার জন্য করা তদন্ত কমিটিকে তিনি বাংলাদেশের পাসপোর্ট পর্যন্ত দেখাতে সক্ষম হননি। তাই বিধি অনুযায়ী কোনো বিদেশি নাগরিক এখানে চাকরির সুযোগ পাবেন না।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ড্রাইভার মনসুর আহমেদকে অবসরে পাঠানো হয়েছে। তেল চুরির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে গত সিন্ডিকেটে ১৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়াও তার বড় অঙ্কের ব্যাংক লোন থাকায় তারই আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট সভা। তার অবসর ভাতার অর্থ দিয়ে এসব ঋণ পরিশোধের সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় দুই শিক্ষককের পদ অবনমনের সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে বলে জানা গেছে। তারা হলেন- ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক শাহাদাত হোসেন আজাদ এবং বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বাকী বিল্লাহ বিকুল। তাদেরকে পদ অবনমন করে যথাক্রমে সহযোগী ও সহকারী অধ্যাপক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তবে যাদের নিকট থেকে অর্থ নেয়া হয়েছে তাদের নিয়োগ দিতে ব্যর্থ হলে তারাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট লিখিত আবেদন জানান। তবে প্রশাসনের নিকট আবেদনের আগেই তাদের টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন ওই দুই শিক্ষক।
অপরদে ছাত্রীকে মানসিক নির্যাতনের ফলে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকারকে ওই ছাত্রীর সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দিয়েছে সিন্ডিকেট সভা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ জানান, আজই এ বিষয়ের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি। তদন্তে কোনো যৌন নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী ওই শিক্ষককে সংশ্লিষ্ট ছাত্রীর সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
ফেরদাউসুর রহমান সোহাগ/আরএআর/জেআইএম