বিশ্ববিদ্যালয় গুন্ডা তৈরির কারখানা না : ভিপি নুর
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:১২ এএম, ০৩ এপ্রিল ২০১৯
ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি কেউ মাদকাসক্ত হয়, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। এ দায়িত্ব ছাত্রলীগের গুন্ডাদের না। বিশ্ববিদ্যালয় গুন্ডা তৈরির কারখানা না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলে এক শিক্ষার্থীকে মারধর ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ভিপি নুরসহ প্রতিবাদী শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত পৌনে ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি রাত পেরিয়ে সকালেও (বুধবার) চলছে। এ সময় এসব কথা বলেন নুর।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বারবার আমাদের ওপর হামলা হচ্ছে। হামলাগুলো ছাত্রলীগের একদল চিহ্নিত সন্ত্রাসী করছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় তারা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। তাই আমাদের দাবি, গতকালের ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সকলকে বহিষ্কার করতে হবে।
নুর বলেন, হল থেকে অছাত্র ও বহিরাগতদের তাড়ানোর জন্য ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছে। হলে অসংখ্য অছাত্র ও বহিরাগত রয়েছে, যাদের ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরেও রাজনীতিক ছত্রছায়ায় হলে থাকেন। তাদেরকে হল থেকে বের না করা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলবে।
আরও পড়ুন > রাত পেরিয়ে সকালেও চলছে অবস্থান কর্মসূচি
যাদেরকে বের করে দেয়া হয়েছে তাদেরকে তো মাদকাসক্ত বলা হচ্ছে- এ প্রসঙ্গে নুর বলেন, ছাত্রলীগের যারা এমন মিথ্যাচার করছে তাদেরই একটা বড় অংশ মাদকাসক্ত। তারাই এই অছাত্র সিট বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত, ক্যাম্পাসের মাদক বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। সুতরাং তাদের কাছ থেকে সব সময় সত্য কথা না, মিথ্যা কথা বের হয়ে আসে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ফরিদ হাসানকে মারধরের ঘটনার ব্যাপারে নুর বলেন, এ ব্যাপারে এসএম হলের ভিপিকে কেন জানাব? আমি হলের প্রাধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি যে, এই ছেলেটিকে তারা পূর্বের দিন রাতে মেরে রক্তাক্ত করেছিল। এ ঘটনার বিচারের দাবিতে প্রাধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ নিয়ে গিয়েছিলাম। প্রাধ্যক্ষকে জানানো হয়েছে। এসএম হলের ভিপি বা ছাত্রলীগের নেতাকে কেন জানাতে হবে?
তিনি আরও বলেন, প্রশাসনও ছাত্রলীগের হাতে জিম্মি। হল, রেজিস্ট্রার বিল্ডিং সবখানেই। প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চায় না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ গুন্ডালীগের হাতে বন্দি থাকতে পারে না। এ অবস্থা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বতন্ত্র ধারায় ফিরে আসতে হবে। সন্ত্রসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
অবস্থান কর্মসূচির ব্যাপারে নুর বলেন, হামলা করেছে ছাত্রলীগের একদল চিহ্নিত সন্ত্রাসী, যারা কোটা সংস্কার আন্দোলনে হামলা করেছে, নির্বাচনের দিন হামলা করেছে, ২০১৮ সালের ২৩ জানুয়ারি যৌন নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীদের মিছিলে হামলা করেছিল। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় বারবার এ অপকর্মগুলো ঘটিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দাবি হচ্ছে, এই চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে হবে এবং প্রত্যেকটি হল থেকে যে অছাত্র, বহিরাগতদের নিয়ে ঝামেলার সৃষ্টি হয়, সেই অছাত্র ও বহিরাগতদের বিতাড়ন করতে হবে। নিয়মিত শিক্ষার্থীরা হলে থাকবেন। এ দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান করব।
আপনাদের দাবি ছিল, ভিসি স্যার এসব ঘটনায় সামনে আসেন না বা কখনো আসেননি। এ বিষয়ে ডাকসু ভিপি বলেন, ছাত্রদের নির্বাচিত প্রতিনিধি আমি হয়ে থাকলে, ন্যায়বিচারের দাবিতে আমি উনার (ভিসি) দরজায় আসলে, নৈতিকভাবে উনার এখানে আসা উচিৎ ছিল। এতে এটা প্রমাণিত যে, তারা ছাত্রলীগের গুন্ডাদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন। যে কারণে তারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কথা শোনার ব্যাপারটা উপলব্ধি করলেন না। কারণ, তারাই তো মদদদাতা, প্রশয়দাতা।
এমইউ/এমএসএইচ/জেআইএম