শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলায় উত্তপ্ত ক্যাম্পাস

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক বরিশাল
প্রকাশিত: ০২:৫৬ পিএম, ২৭ মার্চ ২০১৯

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ না জানানোই এবং এর প্রবাদ করায় উপাচার্যের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলার অভিযোগ এনে তারা এ বিক্ষোভ করছেন।

বুধবার সকাল সকাল ৮টা থেকে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শিক্ষার্থীরা ক্লাসে যোগ দেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন তারা।

জাতীয় বিভিন্ন দিবসে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাইরের অতিথিদের নিয়ে সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গার্ডেন পার্টি, চা পার্টি, ব্যুফে ডিনার আয়োজন করা হলেও সাধারণ শিক্ষার্থীরা সেখানে কেউ অংশগ্রহণ করতে পারে না। এর প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত একাধিক শিক্ষার্থী জানান, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গত মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে বৈকালিন চা চক্র ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এ কারণে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানের বাইরেই প্রতিবাদ জানান শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় ভিসি ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলেন বলে দাবি শিক্ষার্থীদের। এর প্রতিবাদে এবং ভিসির ওই উক্তি প্রত্যাহারের দাবিতে বুধবার সকাল থেকে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আরও জানান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই তাদের মনোরঞ্জন করেন। অথচ সাধারণ শিক্ষার্থীরা আপ্যায়নের অনুষ্ঠানে কেউ অংশগ্রহণ করতে পারে না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়েই করা হয় সকল আয়োজন।

barishal--(2)

তারা জানান, আগামীতে সকল জাতীয় দিবস শিক্ষক-শিক্ষার্থী সমন্বয়ে উদযাপন করা, টিএসসিতে পাঠদান না করানো ও সেমিনার রুমের ভাড়া ৩ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৫শ টাকা করার দাবিতে আন্দোলন করা হচ্ছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

তবে এ বিষয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) রেজিস্ট্রার ড. মো. হাসানুর রহমান জানান, স্বাধীনতা দিবসের অংশ হিসেবে বরিশালের বিশিষ্টজনদের নিয়ে একটা চা চক্রের আয়োজন করা হয়েছিল। এনিয়ে কিছু শিক্ষার্থী বিরোধিতা করায় উপাচার্য বলেছেন, স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের বিরোধিতা করার অর্থ হলো স্বাধীনতাবিরোধী। তার এই বক্তব্যকে নিয়ে একটি মহল ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হক বলেন, মঙ্গলবার কিছু শিক্ষার্থী স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান পণ্ড করার চেষ্টা করে। যারা স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান পণ্ড করার চেষ্টা করে তারা স্বাধীনতা বিরোধী নয় তো কী। আন্দোলনকারীদের মধ্যে জামায়াত-শিবির ঢুকে গেছে এবং তাদের ইন্ধনেই কিছু শিক্ষার্থী আন্দোলনের নামে অরজকতা করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের চেয়ারম্যানকে ডেকে পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হক।

এদিকে বন্দর থানা পুলিশের ওসি গোলাম মোস্তফা হায়দার জানান, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

সাইফ আমীন/এফএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।