ডাকসু নির্বাচনে মাঠের চেয়ে নেটে সরব প্রার্থীরা

আগামী ১১ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন ঘিরে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা। হল কিংবা হলের বাইরে, রাত কি দিন সব সময়, সবখানে চলছে প্রচারণা। ব্যানার কিংবা লিফলেটে তুলে ধরছেন নিজেদের ইচ্ছাগুলো।

তবে মাঠের এ প্রচারের চেয়ে নেটের প্রচারে গুরুত্ব বেশি দিচ্ছেন প্রার্থীরা। নিয়মিত আপডেট দিচ্ছেন প্রচারের। প্রচারণার বিভিন্ন কৌশলে ভোটারদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন তারা। নেটে আনছেন নানা ধরনের কনটেন্ট। যার মাধ্যমে খুব সহজে প্রতিটি ভোটারের কাছে পৌঁছে দিতে পারছেন নিজের মেসেজ।

আবার অনলাইনের এ প্রচারণায় কে, কীভাবে, কতটুকু ভিন্নভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারেন তারও চলছে তুমুল প্রতিযোগিতা। সব প্রার্থীই নিজেকে এ মাধ্যমে ভিন্নভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করছেন। যেমন- ডাকসু নিয়ে গান লিখে নিজ কন্ঠে সেটি গেয়ে ভোট চাওয়া, ছোট ছোট ভিডিও তৈরি করে ভোট চাওয়া, ভিডিও বার্তা দেয়া, নানা আঙ্গিকের স্টিকারের মধ্যে চলছে এসব প্রচারণা।

নেটে বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারণায় বেশি জোর দেয়ার বিষয়ে প্রার্থীরা বলেন, প্রচার-প্রচারণার সময় কম থাকায় এটিই অন্যতম মাধ্যম, প্রতিটি ভোটারের কাছে নিজের মেসেজ পৌঁছে দেয়ার। আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী হলের বাইরে থাকায় তাদের কাছে ভোট চাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন না অনেকে। প্রতিটি শিক্ষার্থী ফেসবুকে সরব থাকায় এটিই প্রচারের কার্যকর প্ল্যাটফর্ম। এ ছাড়া প্রার্থীরা নিজের প্রচারণা শুধু ক্যাম্পাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখতে চান না বরং সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে চান ফেসবুকের মাধ্যমে।

Daksu

কেন্দ্রীয় সংসদে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী এ আর এম আসিফুর রহমান নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রথম থেকেই অনলাইন প্রচারণায় জোর দিয়েছেন। তার নতুন নতুন কনটেন্ট নজর কেড়েছে শিক্ষার্থীদেরও। বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান অনিয়মের কথা উল্লেখ করে তার ওপর লাল দাগ টেনে এর নিচে নিজে কী করতে চান তার বার্তা দিচ্ছেন বিভিন্ন ছবিতে। তার ব্যতিক্রর্মী একেকটি স্টিকার ছড়িয়ে পড়ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ফেসবুক টাইমলাইনে। সমর্থন বাড়ছে শিক্ষার্থীদেরও।

জানতে চাইলে আসিফুর রহমান বলেন, ‘অনলাইন হচ্ছে প্রচারণার সবচেয়ে বড় মাধ্যম। কারণ এর মাধ্যমে খুব দ্রুতই শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানো যায়। আবার আমাদের প্রচারণার জন্য যে সময় রাখা হয়েছে তা খুবই কম। এ সময়ের মধ্যে ৪৩ হাজার ভোটারের কাছে যাওয়া কারও পক্ষে সম্ভব নয়। তাই অনলাইন প্ল্যাটফর্মটি সবচেয়ে কার্যকর বলে আমার কাছে মনে হয়।’

অনেকের ধারণা, অনলাইনে এমন অ্যাক্টিভিটির কারণে নির্বাচনে বড় ধরনের কোনো অনিয়ম করতেও ভাবতে হবে প্রার্থীদের। কারণ তা স্বল্প সময়ে ভোটারদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। এতে অভিযুক্ত প্রার্থীর প্রতি নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হতে পারে।

Daksu

ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সাদ বিন কাদের চৌধুরী (সাদী) বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বে অনলাইন হচ্ছে যেকোনো মেসেজ পৌঁছানোর সবচেয়ে বড় মাধ্যম। আমি যা করতে চাই সেটি জনে জনে পৌঁছে দেয়া কঠিন। কারণ আমাদের প্রচারণার সময় খুবই কম। তাই অনলাইনটা এক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।’

কবি জসীম উদ্দিন হলের ছাত্র আব্দুল হাকিম বলেন, ‘নেটে প্রচারণার মাধ্যমেও নিজের ক্রিয়েটিভিটি প্রমাণ করতে পারে একজন প্রার্থী। এর মাধ্যমেও তিনি নিজেকে অন্য প্রার্থী থেকে আলাদা করতে পারেন। যদি তিনি সেটি করতে পারেন তাহলে তিনি এগিয়ে থাকবেন। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সবকিছুই বোঝেন। তাই তারা নেটের প্রচারণা দেখে ভোট দিলেও বুঝে শুনে দেবেন। তাই নিজেকে সেভাবে উপস্থাপন করা উচিত।’

এমএইচ/এনডিএস/এমএআর/পিআর

টাইমলাইন  

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।