সেই লেক এই লেক

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
প্রকাশিত: ১২:৩৫ পিএম, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকটি একসময় বহিরাগতদের ও মাদকসেবীদের অভয়ারণ্য ছিল। কিন্তু বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে দৃষ্টিনন্দন ও শিক্ষার্থীদের আড্ডার কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে এটি।

২০১৬ সালের ২৯ আগস্ট জাগো নিউজে ‘বহিরাগতদের দখলে ইবির লেক’ শিরনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। তখন এ প্রতিবেদন প্রকাশের মাত্র ৮ দিন আগে বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণ করে। প্রতিবেদনটি তাদের নজরে এলে প্রতিবেদকের কাছে লেকটি সংস্কারের মাধ্যমে দৃষ্টিনন্দন ও মনোমুগ্ধকর করে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক হারুন উর রশিদ আসকারী।

তার প্রতিশ্রুতি অনেকাংশেই এখন বাস্তবায়িত। জঙ্গলাকীর্ণ লেকটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে একটি ইটের রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে ইতোমধ্যে। অতি দ্রুত রাস্তাটি ঢালাই করা হবে বলে প্রধান প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল নিশ্চিত করেছেন।

এছাড়াও আবর্জনা পরিষ্কার করে লেকের পানি স্বচ্ছ করা হয়েছে। লেকে পদ্মফুল ফোটানোরও পরিকল্পনা রয়েছে বলে তিনি জানান। ইতোমধ্যেই লেকে একটি স্টিলের ঝুলন্ত ব্রিজ ও বাশেঁর সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। যা লেকের সৌন্দর্য কয়েকগুন বাড়িয়েছে। এখন সবসময়ই এখানে শিক্ষার্থীদের প্রাণোচ্ছল আড্ডা চলে।

Lake-

অথচ কিছুদিন আগেও এই লেকের পাশ দিয়ে দিনের বেলায় হাঁটতে ভয়ে শিউরে উঠতেন শিক্ষার্থীরা। এখানে একসময় চরমপন্থী সন্ত্রাসী ও মাদকসেবীদের আড্ডাস্থল ছিল। লেকটি প্রথমে আলোচনায় আসে ‘শিক্ষককে ছাত্রলীগ নেতার অস্ত্র প্রশিক্ষণ ’ শিরনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে। জঙ্গলাকীর্ণ ও ক্যাম্পাসের শেষ প্রান্তে হওয়ায় এই স্থানটিকেই অস্ত্র প্রশিক্ষণের স্থান হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন তারা। এছাড়াও লেকে মাছ চাষ করতেন স্থানীয়রা। পাটের মৌসুমে লেকের পানিতে পাট পচানো হতো। পচা পাটের গন্ধে লেকের পাশে অবস্থিত প্রকৌশল অফিস ও তার সামনের রাস্তা দিয়ে চলাচল দুষ্কর ছিল। এসবই এখন ইতিহাস।

এখন এই লেকটিকে ঘিরে শিক্ষার্থীরা দিনে রাতে আড্ডা গানে মেতে থাকেন। বাইরে থেকে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীদের জন্যও এখন লেকটি আকর্ষণের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে। বিকেল হলে যেন প্রাণের মেলা বসে এখানে। প্রেমিক যুগলের পছন্দের শীর্ষেও এখন এই লেক।

প্রধান প্রকৌশলী আলীমুজ্জামান টুটুল বলেন, একটা মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। এর পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে প্রায় ৩ বছর সময় লাগবে এবং ৩ কোটি টাকা খরচ হবে। দর্শনার্থীদের বসার জন্য ইতোমধ্যে বেঞ্চের কাজ শুরু হয়েছে। লেকটি পূর্ণাঙ্গ রূপ নিলে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত হবে।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক হারুন উর রশিদ আসকারী বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের অবসর সময় ও চিত্তবিনোদনের কথা চিন্তা করে লেকটি সংস্কারের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। যেটি ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যপূর্ণ এবং আবেগানুভূতির অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠবে।

ফেরদাউসুর রহমান সোহাগ/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।