বাকৃবিতে পামওয়েল প্রক্রিয়াজাতকরণ মেশিন উদ্ভাবন

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৫:৫৪ পিএম, ২৯ জানুয়ারি ২০১৯

বাদাম তেল, সরিষার তেল, ঘি প্রভৃতি দিয়ে রান্নার কাজ হতো বাংলাদেশে। সময়ের আবর্তনে এসবের ব্যবহার কমেছে। এসবের স্থান অনেকটাই দখল করে নিতে সক্ষম হয়েছে পামওয়েল। বিশ্বের অনেক দেশেই পামওয়েল খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। সরকারি উদ্যোগে পাম গাছ থেকে তেল পাওয়ার জন্য ২০ লাখ পামওয়েল চারা রোপণ করা হয়েছিল দেশে।

এছাড়াও ব্যক্তিগত উদ্যোগেও সিলেট, দিনাজপুর, পার্বত্য অঞ্চলে লাগানো হয় প্রচুর পামগাছ। কিন্তু যন্ত্রের অভাবে গাছ থেকে তেল প্রক্রিয়াজাত করা সম্ভব হচ্ছিল না। এর কারণ ছিল বিদেশ থেকে আমদানিকৃত মেশিনের দাম অনেক বেশি। যা কৃষকের একার পক্ষে কেনা কোনোভাবেই সম্ভব ছিল না। আবার দেশের বাহির থেকে কোনো মেশিন কেনা হলেও তা বাংলাদেশের কৃষকের উপযোগী ছিল না।

এসব বিষয়কে মাথায় রেখে পামওয়েল প্রক্রিয়াজাতকরণ মেশিন উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আওয়াল। মঙ্গলবার কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরি অনুষদের প্রিসিসন ল্যাবে কর্মশালায় প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় এসব তথ্য জানান তিনি।

bau02

অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আওয়াল বলেন, সহজে যেন কৃষকরা এটি ব্যবহার করতে পারে সেদিকে নজর ছিল। পামওয়েলের ব্যাঞ্চ কাটা থেকে ক্রুড ওয়েল তৈরি করতে যত কম সময় লাগে, ততই তেলের উৎপাদন বেশি হয়। কিন্তু বাংলাদেশে সময় উপযোগী মেশিনের অভাবে এটি করা যাচ্ছিল না। এতে কৃষক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতেন এমনকি এটি চাষের আগ্রহও হারিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে মেশিনটি উদ্ভাবন হওয়ায় নতুনভাবে এ সুযোগ তৈরি হলো। এখন থেকে ছোট ছোট খামারিরা এটি ব্যবহার করে সুফল পাবেন। সারাদেশে এটি পৌঁছাতে পারলে বাহির থেকে পামওয়েল আমদানি তো বন্ধ হবেই এমনকি বিদেশেও রফতানির সুযোগ তৈরি হবে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পরিত্যক্ত সমুদ্র অঞ্চলে ও পাবর্ত্য অঞ্চলের পরিত্যক্ত জমিতে পাম গাছ রোপণ করা গেলে পামওয়েলের চাহিদা মেটানো সম্ভব। এক্ষেত্রে বেকারের কর্মস্থানও হবে বলে মনে করেন এই উদ্ভাবক।

কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরী অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. খান মো. হাসানুজ্জামানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. এম এ এম ইয়াহিয়া খন্দকার। কর্মশালার শেষে একটি মুক্ত আলোচনার আয়োজন করা হয়।

উল্লেখ্য, পামওয়েল ফলকে প্রক্রিয়াজাত করে দুই ধরণের তেল পাওয়া যায়। ফলটির মাংসল অংশ (মেসোকার্প) থেকে পাম তেল আহরণ করা হয়, আর বীজ বা শাঁস থেকে পাওয়া যায় পাম কার্নেল তেল। প্রতিটি ফল থেকে ৯ ভাগ পাম তেল ও ১ ভাগ পাম কার্নেল তেল পাওয়া যায়।

শাহীন সরদার/আরএআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।