শিক্ষকদের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার, বহিষ্কার সিদ্ধান্ত কার্যকর
টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনায় পাঁচ ছাত্রকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত কার্যকর করায় শিক্ষকগণ তাদের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করেছেন। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটায় চিঠি ইস্যুর মাধ্যমে বহিষ্কার সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে প্রক্টর ড. সিরাজুল ইসলাম জানান, সোমবার উপাচার্যের সভাপতিত্বে রিজেন্ট বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব তালুকদার, সহসভাপতি ইমরান মিয়া ও পান্না দাস এবং যুগ্ম সম্পাদক জাবির ইকবাল ও ইয়াসিন আরাফাতকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি বলেন, মঙ্গলবার তাদের সাময়িক বহিষ্কারের চিঠি দেয়া হয়েছে। কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না সাত দিনের মধ্যে তার কারণ দর্শাতেও বলা হয়েছে।
প্রক্টর আরও জানান, সোমবার রিজেন্ট বোর্ডের সভায় বোর্ড সদস্য নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য সাইদুল হক চৌধুরীকে প্রধান করে একটি অর্ডিন্যান্স সংশোধনী কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদের ডিন এ কমিটির সদস্য থাকবেন। এ ছাড়া রোববার শিক্ষকদের সঙ্গে কতিপয় শিক্ষার্থীর অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনার বিষয়েও বোর্ড সদস্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য শরীফ এনামুল কবিরকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এদিকে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মহিউদ্দিন তাসনিমের বিরুদ্ধে ওই বিভাগের এক শিক্ষার্থীর আনা যৌন হয়রানির অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘যৌন নির্যাতন ও হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি’কে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে শিক্ষক সমিতির কোষাধ্যক্ষ ড. মাসুদুর রহমান জানান, জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভিন্ন দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করা শিক্ষকদের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় তৃতীয় বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের কোয়ান্টাম মেকানিক্স-১ পরীক্ষা শুরু হয়। এ সময় দ্বিতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারের অকৃতকার্য হওয়া এক শিক্ষার্থীর অ্যাডমিট কার্ডসহ ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ পরীক্ষার হলে নিয়ে আসে। বিভাগের পক্ষ থেকে অনুমোদন না থাকায় জটিলতা দেখা দিলে জোর করে পরীক্ষার আসনে বসিয়ে দেয় ছাত্রলীগের ওই নেতারা। বিভাগের শিক্ষকরা বাধা দিতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব তালুকদারসহ তার সহযোগী আরও কয়েকজন পরীক্ষার হলে দায়িত্বরত শিক্ষকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। পরে এঘটনার বিচার না পেয়ে সোমবার রেজিস্টারের কাছে ৫০ শিক্ষক বিভিন্ন প্রশাসনিক পদ থেকে তাদের পদত্যাগপত্র জমা দেন।
আরিফ উর রহমান টগর/এমএএস/এমএস