অবশেষে তদন্ত হচ্ছে বেরোবির ভর্তি জালিয়াতির

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বেরোবি
প্রকাশিত: ০৫:৪২ পিএম, ০৩ অক্টোবর ২০১৮
ফাইল ছবি

অবশেষে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি জালিয়াতির অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) কর্তৃপক্ষ। গত ১৯ সেপ্টেম্বর তথ্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন জমা দেয়ায় এ তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।

গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইব্রাহীম কবীর গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. আর এম হাফিজুর রহমানকে আহ্বায়ক, সহকারী প্রক্টর এইচ এম তারিকুল ইসলামকে সদস্য সচিব এবং সহকারী প্রক্টর মো. ছদরুল ইসলাম সরকারকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করেন। পরবর্তী সাত কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার কাজী আসাদুজ্জামান তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে গত ২৬-২৯ নভেম্বর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার ও ভর্তির জন্য ১৭ ডিসেম্বর নির্ধারিত দিন ছিল। ওই দিন মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডে ছয় শিক্ষার্থীর আচরণ সন্দেহজনক মনে হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির কথা স্বীকার করেন শিক্ষার্থীরা। পরে তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

এই ছয় শিক্ষার্থী হলেন ‘বি’ ইউনিটের শামস বিন শাহরিয়ার, রিফাত সরকার ও সাদ আহমেদ, ‘সি’ ইউনিটের আহসান হাবীব ও শাহরিয়ার আল সানি এবং ‘এফ’ ইউনিটের রোকসান উজ্জামান। একই দিন ক্যাম্পাসে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরার সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকেও আটক করা হয়।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আবু কালাম মো. ফরিদ উল ইসলাম কোতোয়ালি থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই জালিয়াতির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছাড়াও এক নারীর জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করে স্বীকারোক্তি দেন ভর্তি পরীক্ষায় ‘বি’ ইউনিটে মেধাক্রমে প্রথম হওয়া শামস বিন শাহরিয়ার। আটক শিক্ষার্থীর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ২৯ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী রাহেল চৌধুরীকে আটক করা হয়।

জানা গেছে, ভর্তি জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই কর্মচারী রাহেল চৌধুরী বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। ওই জালিয়াতির ঘটনা উন্মোচন করেন লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মণ্ডল আসাদ ও প্রভাষক সামান্থা তামরিন। তারা উভয়েই সামাজিক অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। অথচ পরবর্তীতে এ দুই শিক্ষককে ভর্তি কার্যক্রম থেকে বাদ দেয়া হয়।

পরবর্তীতে গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনায় অধিক তদন্তে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মাদ আজিজুর রহমানকে আহ্বায়ক তথ্যানুসন্ধান কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত ১৯ সেপ্টেম্বর প্রায় নয় মাস পর এ কমিটি প্রতিবেদন জমা করেন।

তথ্যানুসন্ধান কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মাদ আজিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। পরবর্তী ব্যবস্থা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেখবেন। কালক্ষেপণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ভর্তি পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলতে এবং তথ্য প্রমাণ পর্যবেক্ষণে একটু সময় বেশি লেগেছে।

কথা বললে তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব ও সহকারী প্রক্টর এইচ এম তারিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, চিঠি হাতে পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলবো। তবে প্রতিবেদন জমার কার্যদিবস বাড়িয়ে নিতে আবেদন করবেন বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আর এম হাফিজুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি হাতে পাননি। তবে বিষয়টি শুনেছেন বলে জানান।

সজীব হোসাইন/এমএএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।