রাবিতে শিক্ষার্থীকে মারধর করল ছাত্রলীগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হলের রাউটার থেকে নিজ রুমে ইন্টারনেট সংযোগ নেয়ায় শিক্ষার্থীর কক্ষ ভাঙচুর ও মাদক সেবনের অভিযোগ তুলে আরেক শিক্ষার্থীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে ৪১৫ নম্বর কক্ষ ভাঙচুরের এ ঘটনা ঘটে। এরপর রাত সাড়ে ১২টার দিকে মাদারবখশ হলে শিক্ষার্থীকে মারধর করে ছাত্রলীগ নেতারা। যদিও মারধরের শিকার আব্দুর রহমানের সহপাঠীরা বলছেন তিনি ধুমপান করে না।
সূত্র জানায়, রাত সাড়ে ১২টার দিকে মাদারবখশ হলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান তারই বিভাগের সিনিয়র আশিকের কাছে নোট নিয়ে ফিরে আসার সময় বিশ্ববদ্যিালয় শাখা ছাত্রলীগের প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক আসাদুল্লাহীল গালিব, শুভ্রদেব ঘোষ ও তার সহযোগীরা গাজা সেবনের অভিযোগ তুলে ব্যাপক মারধর করে। এতে তার এক চোখে মারাত্মক আঘাত লাগে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা গালিব বলেন, সেকেন্ড ব্লকের দ্বিতীয় তলায় কয়েকজন মিলে গাজা সেবন করছিলো। বিষয়টি আমরা জানতে পেরে তাদের ধাওয়া করি। এ সময় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের আব্দুর রহমান দৌঁড়াতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে চোখের কোনা কেটে যায়।
এর আগে রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে ইন্টারনেট সংযোগ নেয়াকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর কক্ষ ভাঙচুর করে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরমান কায়সার আবির।
আর ভুক্তভোগী জীবন জোয়ারদার রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ও হলের ৪১৫ নং কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী।
হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, কয়েকদিন আগে নিচতলায় ইন্টারনেটের রাওটার থেকে জীবন তার কক্ষে সরাসরি ওয়াই-ফাই নেন। কেন সংযোগ নেয়া হয়েছে জানতে আবির শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে জীবনকে তার কক্ষে ডাকে। এ সময় জীবনের সঙ্গে আবিরের কথা কাটাকাটি হয়। এর কিছুক্ষণ পর আবির দশ-পনের জনকে সঙ্গে নিয়ে জীবনের কক্ষে ভাঙচুর চালায়।
ভুক্তভোগী জীবন বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে আমাদের ব্লকে ইন্টারনেট সুবিধা নেই। হল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। তাই আমি রাউটার থেকে সরাসরি ওয়াই-ফাই সংযোগ নিয়েছি। আমার মতো আরেকজনও এভাবে সংযোগ নিয়েছে। অথচ তাকে কিছু বলা হয়নি।
তবে ভাঙচুরের বিষয়টি অস্বীকার করেন আবির বলেন, ‘ইন্টারনেট সংযোগের বিষয়ে জীবনের সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হয়েছিলো। পরে আমিসহ কয়েকজন বিষয়টি মীমাংসার জন্য তার কাছে গিয়েছিলাম। তাকে কক্ষে না পেয়ে আমি ফিরে আসি। কারা কক্ষ ভাঙচুর করেছে আমি তা জানি না।
এবিষয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম আনিসুর রহমান বলেন, একজন শিক্ষার্থী আরেকজন শিক্ষার্থীর কক্ষ ভাঙচুর করবে সেটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আগামীকাল হলের নতুন প্রাধ্যক্ষ যোগদান করবেন। আমি হলের দায়িত্বে থাকা অন্যান্য শিক্ষকদের নিয়ে নতুন প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলে ব্যবস্থা নেবো।
আরএ/এমএস