বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য ডাকসু নির্বাচন জরুরি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সিনেটের চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান শিগগিরই ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেছেন, ছাত্র নেতৃত্ব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার স্বার্থে ছাত্র সংসদ নির্বাচন জরুরি।

ইতোমধ্যেই ডাকসু নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে ভোটার তালিকা প্রস্তুতেরও কাজ চলছে। বুধবার নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের বার্ষিক অধিবেশনে সভাপতির অভিভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

অধিবেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীনসহ সিনেট সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ক্যাম্পাসে শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ বজায় রাখার ক্ষেত্রে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বাইরের অশুভ শক্তি তরুণদের সৃজনশীল শক্তিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য নানা কৌশল গ্রহণ করতে পারে। এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের সচেতন থাকতে হবে।

টেকসই ও যুগোপযোগী শিক্ষার বিস্তার ও গবেষণার ক্ষেত্র সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ সংরক্ষণ ও জ্ঞানের উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে সকলকে আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ ও দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। বাস্তবতা ও যুগের চাহিদাকে বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উন্নীত করতে একাডেমিক ও গবেষণার কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে হবে। এক্ষেত্রে আর্থিক চাহিদা মেটাতে ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফান্ড’ গঠনের ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যেই পূর্বাচলে ৫১.৯৯ একর জমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে বরাদ্দ দিয়েছে উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, এই জমির দখল লাভের পর সম্প্রসারিত দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের মান ও র্যাংকিং উন্নয়নে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ‘উচ্চশিক্ষার্থে শিক্ষকদের বিদেশে প্রশিক্ষণ বৃত্তি’ শীর্ষক একটি প্রকল্প চালু করেছিল। পরবর্তী সরকার তা বন্ধ করে দেয়। ‘বঙ্গবন্ধু ওভারসিস স্কলারশিপ’ শিরোনামে বর্তমান সরকার পুনরায় সেটি চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই প্রকল্প চালু হলে শিক্ষকদের দক্ষতা বাড়বে।

মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি নিশ্চিত করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পেশাগত উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে লেকচারার ও সহকারী অধ্যাপকদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে নৈতিকতা, শৃঙ্খলা ও মূল্যবোধ পরিপন্থী কোনো অপরাধ বরদাস্ত করা হবে না- বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে দলমত নির্বিশেষে সকলকে বিচারের আওতায় আনা হবে।

ফেসবুকে ছাত্রীদের প্রতি অশালীন মন্তব্য এবং জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি হওয়াসহ বিভিন্ন অসাধু কর্মের জন্য বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে শাস্তি দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

উপাচার্য বলেন, ২০২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শতবর্ষ উদযাপনের লক্ষ্যে ২০ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর আগেই পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস বিনির্মাণের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

এমএইচ/এমআরএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।