চবি শিক্ষক আনোয়ারের বিরুদ্ধে এবার রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ১১:৫৯ এএম, ১৮ মে ২০১৮

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরী হত্যা মামলার আসামি আনোয়ার হোসেনের চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সালেম মোহাম্মদ নোমানের আদালতে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগের আর্জি জানান ফটিকছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান তানভীর। পরে এ বিষয়ে শুনানি করে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে ওই আর্জি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হিসেবে গ্রহণ করতে চকবাজার থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

আনোয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছে, একটি গবেষণা প্রবন্ধে তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন। সেখানে মুক্তিযুদ্ধকে তিনি ‘হিন্দু মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

আর্জিতে বলা হয়, গত এপ্রিলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পদোন্নতির আবেদনের সঙ্গে ‘রিলিজিয়াস পলিটিক্স অ্যান্ড কমিউনাল হারমনি ইন বাংলাদেশ : এ রিসেন্ট ইমপালস’ শিরোনামে একটি গবেষণা প্রবন্ধ যুক্ত করেন আনোয়ার হোসেন। গত বছরের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী ‘জার্নাল অব হিউম্যান সোশ্যাল সায়েন্সেস: সোশিওলজি অ্যান্ড কালচার’ এ ওই গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিতও হয়।

অভিযোগকারী ফটিকছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান তানভীরের আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করায় এবং বাংলাদেশের ‘মহান মুক্তিযুদ্ধকে হিন্দু–মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা’ বলায় মামলাটি করা হয়েছে। আদালত অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করতে চকবাজার থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। অনুমোদন পাওয়ার পর থানা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। মামলায় দণ্ডবিধির ১২৩ক, ১২৪ক, ১৭৭, ৫০০, ৫০১, ৫০২ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানান তিনি।

দিয়াজ হত্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর গত মার্চ মাসে উচ্চ আদালতের জামিনে মুক্তি পান আনোয়ার। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গত ফেব্রুয়ারিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করলেও মুক্তি পাওয়ার পর আবারও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিতে যোগ দেন।

২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দক্ষিণ ক্যাম্পাসের বাসা থেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় দিয়াজের মায়ের করা হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামি আনোয়ার হোসেন। ওই মামলা হওয়ার পর সহকারী প্রক্টরের পদ থেকে আনোয়ারকে সরিয়ে দেয়া হয়। দিয়াজের মায়ের আবেদনে আদালত ওই হত্যা মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা এবং দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। সে সময় আনোয়ার হোসেনের মুক্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘটও করে ছাত্রলীগের একাংশ।

রাকিব/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।