বর্ষবরণে ব্যস্ত রাবি শিক্ষার্থীরা
পুরনো বছরের অপ্রাপ্তি ও অশুভকে বিদায় দিয়ে নতুন বছরের প্রথম সূর্যকে স্বাগত জানাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েল (রাবি) চারুকলা অনুষদ সহ অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা। শোভাযাত্রাসহ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিতে দিন-রাত এক করে দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্ষবরণের প্রধান আকর্ষণ চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রা। নতুন কি থিম থাকছে এবারে শোভাযাত্রায় এমন ভাবনা বিরাজ করছে সবার মনে।
বর্ষবরণ উদযাপন কমিটি সূত্রে জানা যায়, এবারে চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রায় শোভা পাবে প্রধানত ষাড় ও পায়রা।
কমিটির সদস্যরা জানান, বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি কৃষি। এর সঙ্গে ষাড়ের রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। আর পায়রা হলো শান্তির প্রতীক। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শান্তি রক্ষায় বিশ্বের বুকে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এসব বিবেচনায় রেখে এ বছর শোভাযাত্রার জন্য এই থিম দুটি নির্ধারণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে চারুকলা অনুষদে দেখা যায়, চারুকলা অনুষদ সংলগ্ন বোটানিক্যাল গার্ডেনের দেয়ালে শিক্ষার্থীরা বাঙালি সংস্কৃতির চিরচেনা প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলার কাজ করছেন। দেয়ালের বিভিন্ন অংশে ঢোল, তবলা, গ্রামের কৃষক-কৃষাণির ধান মাড়ানো, গরুর গাড়ি, বাঙালি গৃহবধূ ইত্যাদি চিত্র শোভা পাচ্ছে। কয়েকজন শিক্ষার্থী মুখোশ তৈরি এবং তাতে বিভিন্ন রঙ করছেন। অন্যদিকে চলছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি।
কাজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে অনামিকা দাস ও ফারিয়া হাবিব অর্পি বলেন, পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে চারুকলার প্রতি সবারই অন্যরকম আগ্রহ থাকে। প্রতিবছর শুধু উৎসব দেখতাম। এ বছর এই উৎসবের জন্য কাজ করছি। খুব ভালো লাগছে। আর কাজগুলোও উপভোগ করছি।
চারুকলা অনুষদের বর্ষবরণ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. আমিরুল মোমেনিন চৌধুরী বলেন, পহেলা বৈশাখ পালনের মাধ্যমে আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে ধারণ করতে পারি। এ উৎসবকে বরণ করে নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের পক্ষ থেকে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এবারের উৎসবটি আমরা ভালোভাবে উদযাপন করতে পারবো বলে আমি আশাবাদী।
বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, চারুকলা অনুষদ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ বর্ষবরণ উপলক্ষে নিজ নিজ উদ্যোগে দিনব্যাপী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। তাদেরও রয়েছে শোভাযাত্রা, পানতা-ইলিশ, বাঙালিয়ানা সংস্কৃতি সম্পর্কিত নানা আয়োজন।
বর্ষবরণে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান জানান, বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরের মতো এবারও ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সদা তৎপর থাকবে। এছাড়া ক্যাম্পাসে সব ধরনের অনুষ্ঠান বিকেল ৫টার মধ্যে শেষ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হবে।
রাশেদ রিন্টু/এএম/জেআইএম