মধ্যরাতে ফের উত্তাল রাবি
ঘড়ির কাটায় তখন রাত দেড়টা। চারদিক নিস্তব্ধ। দিনের পাঠ চুকিয়ে অনেক শিক্ষার্থীই তখন ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। হঠাৎ দূর থেকে ভেসে আসে কিছু জোরালো স্লোগান। ‘বঙ্গ বন্ধুর বাংলায়, কোটা প্রথার স্থান নেই’, ‘শেখ হাসিনার বাংলায়, কোটা প্রথার স্থান নেই’, ‘এই মুহূর্তে দরকার, কোটা প্রথার সংস্কার’। এরকম আরো নানা রকমের স্লোগান।
স্লোগান শোনা মাত্রই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হলের ছাত্ররা হৈ হৈ করে দলে দলে হলের সামনে জড়ো হতে থাকে। স্লোগানের তালে তালে ধীরে ধীরে পদযাত্রা করতে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটের দিকে। বিনোদপুর গেট দিয়ে প্রধান সড়ক হয়ে তারা সবাই অবস্থান নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে। প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীর হাততালি আর স্লোগানে প্রধান ফটক তখন গমগমে।
জানা যায়, কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে এমন গুজবের পরিপ্রেক্ষিতে রাবির শিক্ষার্থীরা মধ্যরাতে আন্দোলনে ফেটে পড়ে।
‘কোটা সংস্কার আন্দোলন’ রাবি শাখার সমন্বয়ক মাসুদ মুন্নাফ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা একটা খবর পেয়েছিলাম যে ঢাবিতে আমাদের এক আন্দোলনকারী বন্ধু নিহত হয়েছে। পরে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার আগেই রাবি শিক্ষার্থীদের আর দমিয়ে রাখা যায়নি। তারা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আন্দোলনে বের হয়ে যায়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে আগুন জালিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। ফলে এসময় মহাসড়কের ভারী যানবাহন ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ ছিল।
উল্লেখ্য, রোববার কোটা সংস্কারে দাবিতে ঢাকা-রাজশাহী মহসড়ক বিকেল ৪টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত অবরোধ করে রেখেছিল শিক্ষার্থীরা।
এদিকে কোটা সংস্কারের দাবিতে সোমবার থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে সব ধরনের পরীক্ষা এই কর্মসূচির বাইরে থাকবে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের রাবি শাখার সমন্বয়ক মাসুদ মুন্নাফ বলেন, ‘গত ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছি। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে কাল থেকে আমরা ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালন করব।’
রাশেদ রিন্টু/এফএ/জেআইএম