শেকৃবিতে বাহারি পোষা পাখির প্রদর্শনী
পাখি পছন্দ করে না এমন মানুষের সংখ্যা খুব কমই। শৌখিন পাখিপ্রেমী নগরবাসীদের মনে একটু আনন্দ দিতে ফেসবুক ভিত্তিক ‘এভিয়ান কমিউনিটি অব বাংলাদেশ’ নামে একটি গ্রুপ আয়োজন করে দিনব্যাপী শৌখিন পোষা পাখি প্রদর্শনী।
শুক্রবার রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) প্রাঙ্গণে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। সকাল ১০টা থেকে প্রদর্শনীতে পাখি দেখতে নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন বিভিন্ন বয়সী শ্রেণি-পেশার মানুষ। প্রদর্শনী চলে রাত ৮টা পর্যন্ত।
ব্যতিক্রমধর্মী এ আয়োজনের উদ্বোধন শেষে মন্ত্রী বলেন, খাঁচায় পোষা পাখি ও বনের পাখির মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে যা আমরা অনেকেই জানি না। খাঁচায় পোষা পাখিরা একটু আলাদা, এদের জন্মই শৌখিন মানুষদের মনে আনন্দ সঞ্চার করা। এছাড়া এদের একটা বিশেষ অর্থনৈতিক গুরুত্বও রয়েছে।
প্রাকৃতিক পরিবেশে পাখিদের আবাসস্থল নষ্ট না করার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা যেভাবে গাছ কেটে উজাড় করছি এতে পাখিদের জীবন বিপন্ন হয়ে যাচ্ছে। তিনি সকলকে এ বিষয়ে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।
আলোচনা শেষে দেশি-বিদেশি ২৫ প্রজাতির প্রায় ১ হাজার ২শ’ রকমের পাখির প্রদর্শনী দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ‘এভিয়ান কমিউনিটি’র সদস্যরা। এ প্রদর্শনীতে বাজরিগার, গ্রাস প্যারোট, অস্ট্রেলিয়ান নিউফেমা, জাপানিজ প্লেন্ডিড প্যারাটিড, ডায়মন্ড ডট, ফিঞ্জ, ব্লু গোল্ড ম্যাকাও, স্কারলেট, ম্যাকাও, গ্রে প্যারট, ইউং ম্যাকাও, কনুর, লাভ বার্ড ও গোল্ড পিককের মতো অপরিচিত বিদেশি প্রজাতির পাখির দেখা পাওয়া যায়।
রাজধানীর উত্তরা থেকে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে পাখি দেখতে এসেছেন ডা. আবুল হাসনাত। তিনি বলেন, পাখি পোষা আমারও শখ, এখানে একসঙ্গে অনেকগুলো পাখি ও কমিউনিটির মানুষদের দেখা পাবো তাই চলে এসেছি।
অন্যদিকে, এই প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী মিরপুরের বাসিন্দা ও এভিয়ান কমিউনিটির সদস্য ফিরোজ আহমেদ বলেন, আমি পেশায় আইটি বিশেষজ্ঞ তবে পাখি পোষা আমার শখ, আমার বাসায় এখন ৪০ জোড়া বিদেশি প্রজাতির পাখি আছে।নিজের শখ পূরণের পাশাপাশি কিছু পাখি বিক্রি করে থাকি।
পাখি প্রদর্শনীর উদ্যোক্তা ও এভিয়ান কমিউনিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী বলেন, আমি শুরুতেই একটা ভুল ধারণা ভেঙে দেই- পোষা পাখি (কেইজড বার্ড) আর প্রাকৃতিক পরিবেশের পাখির মধ্যে একটা স্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে। পোষা পাখির একটি জাত আমরা বিদেশ থেকে নিয়ে আসি এরপর আমরা মিউটেশনের মাধ্যমে এসব পাখির বংশ বিস্তার করাই খাঁচার ভেতরেই ফলে এরা শুধু খাঁচার ভেতর থাকার জন্যই তৈরি হয়। সেজন্য বনের পাখির থেকে এরা আলাদা।
বিদেশে পাখি রফতানির মাধ্যমে অর্থনীতির একটা সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পাখিদের খাবার, মেডিসিন, ভ্যাক্সিন ইত্যাদি আমদানি করতে আমাদের অনেক জটিল সমস্যায় পরতে হয়। এটা সহজ করা উচিত সরকারের। এছাড়া পাখিদের লিঙ্গ নির্ধারণের জন্য খুব প্রয়োজনীয় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি এখনো দেশে নেই। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ চাইলে এটা করতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এমবিআর/এমএস