শেকৃবিতে ছাত্রলীগের দু'পক্ষের সংঘর্ষে শিক্ষকসহ আহত ১০

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ১০:৪৫ এএম, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে শেরে-ই-বাংলা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. হাসানুজ্জামান আকন্দ ও ১০ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় দুটি আবাসিক হলে প্রায় ১৮ কক্ষে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়েছে উভয় পক্ষ।

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টায় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলের ক্যান্টিন বন্ধ করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ ঘটে।

আহত শিক্ষার্থীরা হলেন- সভাপতি মাসুদুর রহমান মিঠু গ্রুপের ওমর, রাকিব, মনির, রনি ও শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান গ্রুপের ইমরান, সামিউল, শাহাদাত, সুমন ও আরিফ।

আহত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

sau

রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি কয়েকবার চেষ্টা করেও সংঘর্ষ থামাতে পারেনি। রাত ১২টার দিকে ক্যাম্পাসে শেরে-ই-বাংলা নগর থানা থেকে দাঙ্গা পুলিশ আসে। পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে যাওয়ায় পুলিশ চলে যায়।

কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলের সহকারী প্রভোস্ট তোফায়েল হোসেন বলেন, ‘হলের দুই তালায় সাধারণ সম্পাদকের কর্মীরা অবস্থান করছিলেন। হাসানুজ্জামান আকন্দ স্যার তাদের সরে যাওয়ার জন্য বলছিলেন। এ সময় নিচ থেকে কেউ একজন একটি ইটের টুকরো ছুড়ে মারে। এতেই তিনি চোখের নিচে আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হন।’

প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, রাতে হলের ক্যান্টিনে নিম্নমানের খাবার দেয়ায় সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানের সমর্থক ৭৪ ব্যাচের তৌফিক, প্রতীক, প্রান্তসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্যান্টিন বন্ধ করতে যান। এ সময় ক্যান্টিন বন্ধ করতে না করেন সভাপতি গ্রুপের সমর্থক মুহিত। এতে মুহিতের সঙ্গে কথা কাটা-কাটি হয় সাধারণ সম্পাদক সমর্থকদের। এ সময় মুহিতের সঙ্গে যোগ দেয় সভাপতি গ্রুপের বেশ কিছু সমর্থক। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে জিআই পাইপ, নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত পাথর ও হক স্টিকসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শেরে-ই-বাংলা হলের ১২৩, ২১২, ৩২১, ৩২২, ৩২৫, ৩২৬, ৩২৭ ও ৩২৮ নম্বর কক্ষ এবং কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলের ১১৩, ১১৬, ১২৩, ২০৫, ৩০৬, ৪০৬ ৬১১, ৬২০ ও ৬১৯ নম্বর কক্ষে ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়েছে।

sau

অভিযোগ উঠেছে, সভাপতি গ্রুপের মুহিত, আবির ইবনে সিনহা, মান্নান, শামীম এবং সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের রতন, শামীম, সনেট কক্ষ ভাংচুর ও সংঘর্ষে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘ঘটনা সম্পর্কে প্রশাসন অবগত। সামান্য একটা ব্যাপার নিয়ে এত বড় ঘটনা ঘটে গেল। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে কক্ষ ভাংচুরে অনেক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। দোষীদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। সবাইকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুদুর রহমান মিঠু বলেন, ‘আমার গ্রুপের পাঁচজন আহত হয়েছে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’

সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমার পাঁচজন ছোট ভাই গুরুতর আহত হয়েছে। আজকের মারামারিতে যারা ইন্ধনদাতা, তাদের চিহ্নিত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

মো. রাকিব খান/এমবিআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।