জাবিতে র্যাগিংয়ের ঘটনা তদন্তে কমিটি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের হাতে প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের ঘটনায় তদন্ত করতে কমিটি গঠিত হয়েছে।
রোববার সকাল দশটার দিকে কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একাডেমিক কমিটির জরুরি বৈঠকে গঠিত ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে শুক্রবার রাতে বিভাগটির দ্বিতীয় বর্ষের চার শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে অভিযুক্ত মামুন, হিমেল, সুদীপ্ত ও আনোয়ার জিজ্ঞাসাবাদে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কথা অস্বীকার করেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদকারী ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক এটিএম আতিকুর রহমান বলেন, তারা র্যাগিংয়ের বিষয়টি এড়িয়ে গেছে। তবে তাদের কথা শুনে যতটুকু বোঝা গেছে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের হাতে র্যাগিংয়ের শিকার হন।
এতে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে ওই শিক্ষার্থী। মিজানুরের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার কাইকোরিয়াকান্দা গ্রামে। তিনি শহীদ সালাম-বরকত হলের আবাসিক ছাত্র।
মিজানুরের সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বুধবার দুপুরে বিভাগটির দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা (৪৬ ব্যাচ) প্রথম বর্ষের (৪৭ ব্যাচ) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার জন্য ডেকে পাঠায়। সেখানে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদেরকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে।
এছাড়া মিজানুরকে তার আবাসিক হল (শহীদ সালাম বরকত হল) ছেড়ে আ ফ ম কামালউদ্দিন হলে ওঠার নির্দেশ দেয়া হয়। কামালউদ্দিন হলে না উঠলে তাকে হত্যা ও গুম করারও হুমকি দেয়া হয়। পরের দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে আবারও তাকে মানসিক নির্যাতন ও হুমকি দেয়া হলে মিজানুর ভয় পেয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে।
মিজানুরের চাচা জয়নাল আবেদীন বলেন, মিজানুরের অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। সে পরিবারের সদস্যদের দেখেও ভয় পাচ্ছে। তাকে সাইকিয়াট্রিস্ট দেখানো হয়েছে। সোমবার রিপোর্ট দেখে পরবর্তী চিকিৎসা দেয়া হবে।
এদিকে, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদেরকে র্যাগিং থেকে রক্ষার দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মঞ্চের ব্যানারে বামপন্থী শিক্ষকরা ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি পৃথক সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানায়।
হাফিজুর রহমান/এএম/এমএস