রাবিতে ভর্তি পরীক্ষা : রমরমা ব্যবসায় মেস মালিকরা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৮:৪১ এএম, ২০ অক্টোবর ২০১৭

আগামী ২২ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা। ফলে ভর্তিচ্ছুদের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে উঠবে রাবি ক্যাম্পাসসহ নগরীরর আদ্যপান্ত। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা এই ভর্তিচ্ছুদের মেসে থাকতে তাই রমরমা ব্যবসার ছক কষেছেন মেস মালিকরা।

মেসে থাকা বাবদ একজন ভর্তিচ্ছুকে ১০০ টাকা করে মেস মালিকদের দিতে হবে। রাজশাহী জেলা মেসমালিক সমিতির সদস্যদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের বৈঠকে এ সিধান্ত নেওয়া হয়। তবে প্রথম দিকে এই টাকার অঙ্কটা ছিল দ্বিগুণ। ২০০ টাকা করে প্রতি ভর্তিচ্ছুর কাছ থেকে নেবে বলে দাবি জানিয়েছিল মেস মালিক সমিতি।

কিন্তু পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন-সমালোচনার মুখে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে টাকার অঙ্কটা ১০০ তে নামিয়ে নেয় মেস মালিক সমিতি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয়বার অংশগ্রহণের সুযোগ চালু হওয়ায় এ বছর রেকর্ডসংখ্যক ৩ লাখ ১৬ হাজার ১২০টি আবেদন জমা পড়েছে। সব মিলিয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর সংখ্যা হবে প্রায় এক লাখ ২১ হাজার। যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ।

বাড়তি ভর্তিচ্ছুর চাপকে কাজে লাগিয়ে তাই মেস মালিকেরা অতিরিক্ত অর্থ উপার্জনের ছক কষেছেন বলে অভিযোগ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ ভর্তিচ্ছুরা। তারা বলছেন, বছরের একটা সময়ে মেসের পরিচিতদের কিছু ভর্তিচ্ছু আসে পরীক্ষা দিতে। মানবিক দিক বিবেচনা করে হলেও এভাবে তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া উচিৎ নয়। আর তাছাড়া মেসে যারা থাকে তারা তো টাকা দিয়ে থাকেই।

বিগত কয়েক বছরের তথ্য থেকে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কাজলা, মেহেরচন্ডী, বিনোদপুর, মির্জাপুর ও তালাইমারী এলাকার মেস মালিকরা সিট ভাড়া বিদুৎবিল ও পানি বিলের কারণ দেখিয়ে প্রত্যেক ভর্তিচ্ছুর কাছ থেকে প্রতি রাতের জন্য ২০০ টাকা করে নিয়ে থাকেন। কখনো কখনো সুযোগ বুঝে এই টাকার অঙ্কটা আরো বেড়ে যায়।

এ বছর টাকার অঙ্কটা নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও ভর্তিচ্ছুদের ভোগান্তি বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন মেসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, অনেক সময় সমিতির সিদ্ধান্ত মেস মালিকরা মানেন না। ফলে তারা অতিরিক্ত টাকা আদায়ের জন্য প্রস্তুত থাকবেন। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও মেস মালিক সমিতির প্রতি আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুরের ক্ষণিকা ছাত্রবাসের করিম নামের এক শিক্ষার্থী জানান, ভর্তিচ্ছুদের অসুবিধার কথা না ভেবে মেস মালিকরা তাদের ব্যবসাকে বড় করে দেখেন। মেস মালিকদের এ লোভে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সায় না দিয়ে উচিত ছিল এটা বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

জানতে চাইলে মেস মালিক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম সিদ্দিকী বলেন, মেসে থাকতে হলে তো অতিরিক্ত খরচেরও বিষয় আছে। তাই শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে ২০০ টাকা থেকে নামিয়ে ১০০ টাকা করা হয়েছে। একজন ভর্তিচ্ছু যে কদিন মেসে থাকুক কেনো তাদের কাছ থেকে শুধু ১০০ টাকা নেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান জাগো নিউজকে জানান, মেস মালিক সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। তারা একশ টাকার বেশি চাঁদা ভর্তিচ্ছুর কাছ থেকে নিতে পারবে না।

রাশেদ রিন্টু/এফএ/এমএস/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।