দুই সপ্তাহেও চালু হয়নি শাবির ডাইনিং, দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা
ঈদুল আজহার ছুটি শেষে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) খোলার দু-সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও চালু হয়নি আবাসিক হলের ডাইনিং। গত ৬ সেপ্টেম্বর অফিসিয়াল কার্যক্রম শুরু হলেও এখনও চালু হয়নি শাহপরান হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ডাইনিং।
অভিযোগ উঠেছে, দুই হলের প্রভোস্টদের সীমাহীন গাফিলতিতে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় দুই হলের প্রায় ১১ শতাধিক শিক্ষার্থী খাবার নিয়ে চরমে দুর্ভোগে পড়েছেন।
এদিকে ডাইনিং নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার সুযোগ নিয়ে ফায়দা হাসিলে উঠেপড়ে লেগেছেন ক্যান্টিন মালিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকার রেস্টুরেন্ট মালিকরা। ফলে শিক্ষার্থীদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে খাবার বিক্রি করা হচ্ছে।
গত ২৯ আগস্ট ঈদের ছুটির পর থেকে দুই হলের ডাইনিং বন্ধ রয়েছে। ডাইনিং মালিকরা অভিযোগ তুলেছেন, ছাত্রলীগের কয়েক নেতা ও তাদের অনুসারীরা ফাও খেয়ে তাদের সর্বনাশ করেছেন। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে যোগ হয়েছে কতিপয় ছাত্রনেতাদের ফাও খাওয়া।
ডাইনিং ম্যানেজার এবং বাবুর্চিদের অভিযোগ, ডাইনিংয়ের জন্যে কর্মচারী পাওয়া যাচ্ছে না। কর্মচারী প্রতি মাত্র দেড় হাজার টাকা করে দেয় হল প্রশাসন। ফলে এত কম টাকায় কোনো কর্মচারী কাজ করে না। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের রেস্টুরেন্টগুলিতে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা করে কর্মচারীদের বেতন দেয়া হয়। খাবারে হল কর্তৃপক্ষের কোনো ভর্তুকি না দেয়ায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে তাদের দাবি।
শিক্ষার্থী আরিফ অভিযোগ করেন, ডাইনিং বন্ধ থাকায় চড়া দামে তাদের খাবার খেতে হচ্ছে। ক্যান্টিনেও চড়া দামে নিম্নমানের খাবার বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু ডাইনিং চালুর ব্যাপারে প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই।
এ বিষয়ে শাহপরান হলের ডাইনিংয়ের বাবুর্চি সিদ্দিক মিয়া বলেন, হলে কর্মচারীদের যে বেতন দেয়া হয়, তাতে কোনোভাবেই ডাইনিং চালানো সম্ভব না। শাহপরান হলে প্রায় ১ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা বাকি রয়েছে বলে তিনি জানান। এর মধ্যে ‘কয়েকজন’ ফাও খায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের হলের ডাইনিংয়ের বাবুর্চি হাবিব মিয়া বলেন, এত বছর কাজ করেও আমার চাকরি অস্থায়ী। বারবার আশ্বাস দিলেও কেউ চাকরি স্থায়ী করেনি। আর আমার যা বেতন এবং কর্মচারীদের যে বেতন, সেটা দিয়ে কিভাবে ডাইনিং চালানো সম্ভব।
তিনি মাত্র ৩ হাজার টাকা পান বলে উল্লেখ করেন।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এস এম হাসান জাকিরুল ইসলাম বলেন, ডাইনিং মালিকরা আমাদের কথা শোনেননি। ৬ তারিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হলেও ডাইনিংয়ের বাবুর্চি মোবাইল বন্ধ করে রেখেছে এবং গত শুক্রবার ( ১৫ সেপ্টেম্বর) ডাইনিং চালাতে পারবে না বলে অপরাগতা প্রকাশ করেছে। ফলে শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগে পড়েছে। দ্রুত ডাইনিং চালু হবে বলে তিনি জানান।
আব্দুল্লাহ/আরএআর/জেআইএম