ওরা আমার গায়ে হাত তুলবে কেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:০০ পিএম, ০৪ আগস্ট ২০১৭

‘আমার গায়ে হাত তুলল কেন? আমি কি অপরাধ করেছিলাম যে আমার গায়ে হাত তুলে আইডি কার্ড ছিনিয়ে নিতে হবে? আমার যদি কোন অপরাধ থাকত তাহলে তারা আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারত, সেখানে আমি এর জবাবদিহি করতাম এবং আদালতের মাধ্যমে পরিচয়পত্র ফিরিয়ে দিতাম।’

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও তার দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে শারীরিক লাঞ্ছনার বিষয়ে জাগোনিউজ লাইভে এভাবেই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের লেকচারার ফারহান উদ্দিন আহমেদ।

ফারহান উদ্দিন বলেন, আমার শিক্ষানবিশ সময় শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে স্থায়ী হওয়ার জন্য আবেদন করি। সেই আবেদন নাকচ করে আমাকে অন্যায়ভাবে বরখাস্ত করা হয়। আমি ভিসির কাছে ব্যাখ্যা চাই। তবে কোন ব্যাখ্যা না দিয়ে আমার আইডি কার্ড জমা দিতে বলা হয়। আইডি কার্ড জমা দিতে অস্বীকৃতি জানালে রেজিস্ট্রার তার দুই সহযোগীকে আমার আইডি ছিনিয়ে নিতে বলে। তখন আমাকে মারধর করা হয়। তারা আইনকানুন না মেনে পরিকল্পিতভাবে আমার উপর হামলা চালিয়েছে। আমি এর বিচার দাবি করছি।

ফারহান উদ্দিন বলেন, লেকচারার হিসেবে আমি ১ বছর ব্র্যাকে দায়িত্ব পালন করছি। শিক্ষকতার জন্য আমার সব ধরনের যোগ্যতা রয়েছে। আমার পারফরমেন্সে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও ডিরেক্টর ফিন্যান্স বরাবর প্রশংসা করত। তারপরও অন্যায়ভাবে আমাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

তবে আমি বরখাস্তের কারণ কিছুটা অাঁচ করতে পেরেছি। এটা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত আক্রোশ। একজন শিক্ষক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে আমি প্রশ্ন তুলি। এ কারণেই হয়তো আমাকে বরখাস্ত করা হয়।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে তিনি বলেন, রেজিস্ট্রারের দুই সহযোগী যখন আমাকে মারধর করে আমার পাঞ্জাবি ছিঁড়ে ফেলে তখন ওই রুমের বাইরেই ছিল কয়েকজন শিক্ষার্থী। আমি সেখান থেকে বনানী থানা পুলিশকে ফোন দিই, তারা আমাকে থানায় গিয়ে অভিযোগ করতে বলে। থানা থেকে ফিরে দেখি শিক্ষার্থীরা এই অন্যায়ের বিচারের দাবিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্দোলন করছে। এতে আমার কোন পৃষ্টপোষকতা নাই।

তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় তাদের উপর নিরাপত্তাকর্মীদের হামলা ও ছাত্রীদের লাঞ্ছনার ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এছাড়া আন্দোলনরত অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের ফোন করে ডাকা হয়েছে। অনেকের স্কলারশিপ ছিনিয়ে নেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে। এটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না বলে মন্তব্য করেন ফারহান।

ফারহান উদ্দিন আহমেদ বনানী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলেও সেটি এখনো মামলা হিসেবে গ্রহণ করেনি পুলিশ।

এর আগে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় ৬ দিন ধরে বিক্ষোভ করছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার তারা আমরণ অনশন করে। শুক্রবার দুপুর থেকে আবারো আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা।

এআর/ওআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।