রাবির নতুন হলে ফাটলে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নব নির্মিত মতিহার হলের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। এ ভবন নির্মাণে যেসব ঠিকাদার ও প্রকৌশলী যুক্ত আছেন তাদের শাস্তির দাবিসহ মোট তিন দফার দাবি নিয়ে মানববন্ধন করেছে মতিহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুর ১টার দিকে হলের সামনে তারা এই কর্মসূচি পালন করে।
শিক্ষার্থীদের অন্য দুই দাবি হলো, দ্রুত এই ঝুঁকিপূর্ণ মতিহার হল ভেঙে এখানে পুনরায় ভবন নির্মাণ করা এবং আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মতিহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের আবাসনের ব্যবস্থা করা।
মতিহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. শামীম হোসেনের সঞ্চালনায় এসময় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এম মিজানুর রহমান রানা। এসময় মানববন্ধনে তিন দফার একটি স্মারকলিপি পাঠ করে শোনান লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ও মতিহার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী বোরহান হোসেন বাপ্পী।
এসময় মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমরা এখানে অনেক শিক্ষার্থী থাকি। কিন্তু এই ঝুঁকিপূর্ণ নির্মাণের কারণে আমরা এই হলে থাকতে সব সময় শঙ্কিত থাকি। নির্মাণের শুরুতেই এই ভবনে ফাটল ধরেছিলো। আবার পরপর ঘটে যাওয়া এই সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে আরো ফাটল দেখা দিয়েছে।
এসময় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ‘ফাটলের এই বিষয়টি প্রশাসনের কাছে জানালে তারা এসে সেখানে হালকা বালু মাখিয়ে রং করে চলে যান। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা ওই তিন দফার দাবি নিয়ে স্মারকলিপিটি উপাচার্যের কাছে দেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভবনের পশ্চিম ব্লকের বিভিন্ন কক্ষে, ছাদে, সিঁড়ির কাছে ফাটল দেখা দিয়েছে। এই ভবনের দেয়ালে হালকা আঘাত করলেই এর পলেস্তারা খসে পড়ছে। এ অবস্থায় আবার ভবনের চতুর্থ তলায় নির্মাণ কাজ চলছিলো।এসময় হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা গিয়ে শ্রকিকদের বাধা দিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী সারওয়ার জাহান জাগো নিউজকে বলেন, তিনি প্রধান প্রকৌশলীকে সঙ্গে নিয়ে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ার কয়েকটি পুরাতন ভবন এবং মতিহার হল ঘুরে দেখেছেন। ফাটলগুলো খুব বেশি না। তবুও এ ঘটনায় ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. ইউনুস আহমদ খানকে সভাপতি করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি বিষয়টি ক্ষতি দেখবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দফতর সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে হলের পূর্ব ও পশ্চিম ব্লকের নির্মাণকাজ চলে আসছে। এখন দুটি ব্লকেরই ৪র্থ তলার কাজ চলছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলী সিরাজুম মুনীর জাগো নিউজকে বলেন, আমরা হলের ভবন ঘুরে দেখেছি। কিছু জায়গায় ফাটল দেখা গেছে। কিন্তু সেগুলো গুরুতর নয়। শিক্ষার্থীদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় নিমার্ণকাজে বিভিন্ন ঠিকাদার কাজ করেছে। তবে যেহেতু ঠিকাদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এমজেড/আরআই