রাকসু নির্বাচনে ফল নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবে পুরুষ ভোটার
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে ক্যাম্পাসে তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করছে। আগামীকাল (১৬ অক্টোবর) অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন চলছে শেষ মুহূর্তের হিসাব-নিকাশ। ভোটারদের সংখ্যাগত অনুপাত বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এবারের ভোটে পুরুষ শিক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি—প্রায় ৬২ শতাংশ।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, মোট ভোটার ২৮ হাজার ৯০১ জনের মধ্যে ১৭ হাজার ৫৯৫ জনই পুরুষ। এই সংখ্যাগত প্রাধান্যের কারণে নির্বাচন বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এবারের রাকসু নির্বাচনে প্রার্থীরা মূলত পুরুষ ভোটারদের সমর্থন নিয়েই জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যদিও নারী ভোটারদের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ, তবে সংখ্যায় এগিয়ে থাকায় পুরুষ ভোটের ওপরই নির্ভর করছে ভিপি, জিএস, এজিএস-সহ শীর্ষ পদগুলোর প্রার্থীর ভাগ্য।
কমিশন বলছে, এবারের রাকসু নির্বাচনে ২৩টি পদে লড়ছেন ২৪৭ জন। পদভিত্তিক প্রার্থীর সংখ্যা বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে- সহ-সভাপতি পদে ১৮ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ১৩ জন, সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে ১৬ জন। এছাড়া ক্রীড়া ও খেলাধুলা সম্পাদক পদে ৮ জন, সহকারী ক্রীড়া ও খেলাধুলা সম্পাদক পদে ৬ জন। বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক পদে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, সহকারী বিতর্ক ও সাহিত্য সম্পাদক পদে ৮ জন।
এছাড়া সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ১০ জন, সহকারী সাংস্কৃতিক সম্পাদক ৯ জন প্রার্থী। মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং সহকারী মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে উভয়েই ৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন। নারী বিষয়ক সম্পাদক পদে ৬ জন, সহকারী নারী বিষয়ক সম্পাদক ৮ জন। তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে ১৩ জন, সহকারী তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বী। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ৯ জন, সহকারী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ৮ জন প্রার্থী লড়ছেন। পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদে ১২ জন এবং সহকারী পরিবেশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ১৬ জন প্রার্থী। সর্বশেষ, কার্যনির্বাহী সদস্য পদে ৫৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পুরুষ ভোটারদের সংখ্যাগত প্রাধান্য নির্বাচনের ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারে। বিশেষ করে সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থীরা পুরুষ ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে প্রচারণায় বেশি সময় ও শক্তি দিচ্ছেন।
নির্বাচন কমিশন জানাচ্ছে, ভোটারদের নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য বুথে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রেই পর্যাপ্ত বুথ, টেবিল ও ব্যালট বাক্স স্থাপন করা হয়েছে। ভোটের দিন শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, এবারের রাকসু নির্বাচনে ভোটার অনুপাত প্রার্থীদের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পুরুষ ভোটারদের সংখ্যাগত প্রাধান্য ও নির্বাচনি আগ্রহের কারণে মূলত পুরুষ ভোটের মাধ্যমে প্রার্থীরা বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ভোটের ফলাফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে জানা যাবে, কোনো প্রার্থী বা প্যানেল শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন।
নাসিমুল মুহিত ইফাত নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, পুরুষ ভোটারদের সংখ্যাই বড়, তাই প্রধান পদে নির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রে তাদের প্রাধান্য থাকবে। ভোটের সময় পুরুষ শিক্ষার্থীর উপস্থিতি প্রার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ছাত্রী ফারিহা ইসলাম মিম বলেন, নারী ভোটাররা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, তবে সংখ্যায় কম হওয়ায় পুরুষ ভোটের প্রাধান্য নির্বাচনের রূপ নির্ধারণ করবে।
সাখাওয়াত হোসেন/কেএইচকে/এএসএম