কুয়েটের ২২ ছাত্রের নামে মামলা, শিক্ষক সমিতির উদ্বেগ

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ২২ ছাত্রের নামে মামলা দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি।
রোববার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেন সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
এতে উল্লেখ করা হয়, বহিরাগত সন্ত্রাসী কর্তৃক শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার প্রায় দুই মাস পর জনৈক ব্যক্তি ছাত্রদের নামে মামলা করে। এ ঘটনায় শিক্ষক সমিতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। এহেন কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় সবার মধ্যে অনাস্থার পরিবেশ তৈরি করবে এবং ভবিষ্যতে সহাবস্থান অনিশ্চিত করে তুলবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ১৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। উক্ত সংকট কাটিয়ে উঠতে সব শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং দ্রুত শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার চেষ্টা চলছে। ছাত্রদের ওপর হামলাসহ শিক্ষকদের লাঞ্ছিত ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে দোষীদের বিচার নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষক সমিতি একাধিকবার দাবি জানিয়ে আসছে। সেই সঙ্গে বহিরাগত সন্ত্রাসী কর্তৃক হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়ের করা মামলার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ পূর্বক উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ারও জোর দাবি জানিয়ে আসছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কিছু ছাত্র উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভিন্ন রকম মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে সাধারণ ছাত্রদের প্ররোচিত করা ও তদন্ত কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করার তথা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা করছে। এ অবস্থায়, ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক অবস্থা দ্রুত ফিরিয়ে আনতে ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাই এক সঙ্গে কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করছে শিক্ষক সমিতি।
বিজ্ঞপ্তিতে সবাইকে সংকটময় এই পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধারণ করে তদন্ত কার্যক্রমকে সহায়তা করার জন্য আহ্বান জানান শিক্ষক সমিতি।
এর আগে ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হন শতাধিক শিক্ষার্থী। এ ঘটনার দুমাস পর মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার হোসেন আলী ২২ শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করে আদালতে মামলার আবেদন করেন।
মামলার আবেদন সূত্রে জানা যায়, কুয়েট মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক (২২), ইসিই বিভাগের জাহিদুর (২৩), ট্রিপল ই বিভাগের ওবাইদুল্লাহ (২৩), ট্রিপল ই বিভাগের মোহন (২৩), ট্রিপল ই বিভাগের গালিব রাহাত (২৩), ট্রিপল ই বিভাগের সাদাত তানভীর মাহিন (২৩), মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের রায়হান শরিকুল (২৩), ট্রিপল ই বিভাগের শেখ মুজাহিদ (২৩), আইইএম বিভাগের সাজ্জাদ ফরহাদ (২৩), মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের হিমেল (২৩), মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শোভন (২৩), ইসিই বিভাগের ইছা আনছারী (২০), সিএইচই বিভাগের আবু হাসান খালিদ (২৩), এলই বিভাগের ইয়াছিন রোওয়ান (২০), এমই বিভাগের ফজলে রাব্বি, কুয়েট শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম নায়েল, এমই বিভাগের সাফতি আনছারী (২৩), কুয়েট শিক্ষার্থী আব্দুর রাহিম মৃধা (২০), এমই বিভাগের আজমাইন ইসরাক অর্ণব (২০), ট্রিপল ই বিভাগের মুজাহিদ (১৯), ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোডাকশন ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মাহাদি হাসান (২৫), কুয়েট শিক্ষার্থী অভি (২৩) ও অজ্ঞাত ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়।
আরিফুর রহমান/জেডএইচ/জিকেএস