প্রতিদান দিবসে সুপারিশের ধরন
আল্লাহ তাআলা প্রতিদান দিবসের অধিপতি। তিনি সেথায় সকল মানুষের বিচার করে আমলনামা প্রদানে ফয়সালা দিবেন। তন্মধ্যে সত্তর হাজার লোক বিনা হিসেবে জান্নাত লাভ করবে। আর বাকীরা সুপারিশের মাধ্যমে নাজাতপ্রাপ্ত হবে। এ প্রতিদান দিবসের সুপারিশ হবে দুই ধরনের। যা তুলে ধরা হলো-
১. বিশেষ শাফাআত বা সুপারিশ-
ক. শাফাআতে কুবরা- বিশ্বনবীর সুমহান সুপারিশ। হাশরের ময়দানে অবস্থানরত মানুষদের ফয়সালার জন্য বিশ্বনবী শাফাআত করবেন। আল্লাহ তাআলা তাঁর সুপারিশ গ্রহণ করে তাদের মাঝে ফয়সালা দিবেন। ইহাই হলো বিশ্বনবীর ‘মাকামে মাহমুদ’।
খ. কিছু উম্মতের জন্য সুপারিশ- বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশেকারী মাত্র সত্তর হাজার। আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় রাসুলকে বলবেন, আপনার উম্মতের মধ্য হতে জান্নাতের ডান দরজা দিয়ে প্রবেশ করান, যাদের কোনো হিসাব নেই।
গ. পাপ-পূর্ণের ভিত্তিতে সুপারিশ- যাদের পাপ এবং পূর্ন সমান সমান, তাদের জন্য বিশ্বনবী শাফাআত করবেন এবং তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে।
ঘ. মর্যাদার সুপারিশ- আমলের কারণে জান্নাতে মর্যাদা বাড়ানোর জন্য বিশ্বনবীর সুপারিশ।
ঙ. চাচার জন্য সুপারিশ- যার প্রত্যক্ষ মদদে বিশ্বনবী বিনা বাধায় সাহসের সঙ্গে ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন, সে চাচা আবু তালিবের শাস্তি কমানোর জন্য সুপারিশ করবেন।
চ. সকল মুমিনের জান্নাতে প্রবেশের অনুমতির জন্য সুপারিশ।
২. সাধারণ শাফাআত বা সুপারিশ-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, অন্যান্য নবি-রাসুলগণ, ফিরিশতাদের, মুমিনদের এবং শহীদদের সুপারিশ। এ সুপারিশ হবে জাহান্নামে না নেয়ার জন্য বা জাহান্নাম থেকে বের করার জন্য। হাদিসে এসেছে-
ক. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘প্রত্যেক নবির কবুল দোয়া রয়েছে। প্রত্যেক নবি তাঁদের দোয়া শেষ করে দিয়েছেন। আর আমি কিয়ামতের দিন সুপারিশের জন্য আমার দোয়াকে লুকিয়ে রেখেছি। আমার উম্মতের যে সকল মানুষ আল্লাহর সাথে কোনো কিছুকে শরিক না করে মারা গেছে তারাই এ সুপারিশ পাবে। (বুখারি ও মুসলিম)
খ. ফেরেশতাদের ব্যাপারে আল্লাহ বলেন, ‘আকাশে অনেক ফেরশেতা রয়েছে। তাদের কোনো সুপারিশ ফলপ্রসূ হয় না, যতক্ষণ আল্লাহ যার জন্যে ইচ্ছা ও যাকে পছন্দ করেন, অনুমতি না দেন।’ (সুরা নাজম : আয়াত ২৬)
গ. হজরত আবু দারদা রাদিয়াল্লাহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘একজন শহীদের সুপারিশ তার নিজ পরিবারের সত্তর জনের জন্য গ্রহণ করা হবে।’ (আবু দাউদ)
সুতরাং সুপারিশের পূর্বশর্ত হচ্ছে- তাওহিদের কালিমায় বিশ্বাসী হওয়া। আল্লাহ তাআলা প্রত্যেককে ঈমানদার, আশেকে রাসুল হিসেবে জীবন গঠন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/পিআর