ফারমার্স ব্যাংকের কর্মকাণ্ডে বিব্রত অন্যান্য ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:০৯ এএম, ১৬ জানুয়ারি ২০১৬

বেসরকারি খাতের ফারমার্স ব্যাংকের পরিচালনা পদ্ধতিতে বিব্রত একই সময়ে কার্যক্রমে আসা অন্য ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। তারা বলছেন, একই সময়ে কার্যক্রম শুরু করলেও অন্য কোনো ব্যাংক এভাবে সুশাসনের ঘাটতি না দেখালেও একমাত্র ফারমার্স ব্যাংক তাদের সুনামকে নষ্ট করছে। ফারমার্স ব্যাংকের কারণে নতুন প্রজন্মের ব্যাংক উদ্যোক্তা হিসেবে আমরা রীতিমতো বিব্রত ও বিরক্ত।

ফারমার্স ব্যাংকের সঙ্গে কার্যক্রম শুরু করা একটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। ওই চেয়ারম্যান বলেন, মহিউদ্দীন খান আলমগীর একজন সাবেক আমলা ও বিজ্ঞ রাজনীতিক। সরকারের মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ফারমার্স ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক। এখন ফারমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান। তার ব্যাংকে এতোটা সুশাসনের ঘাটতি কল্পনা করা যায় না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এই চেয়ারম্যান আরো বলেন, নতুন ৯টি ব্যাংকের লাইসেন্স প্রক্রিয়া শুরু হলে এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হয়েছে। অর্থনীতিবিদ থেকে শুরু করে সংবাদ মাধ্যমের একটি অংশ এর বিপক্ষে মত দিয়েছেন, যুক্তি দিয়েছেন। তাই আমরা যদি ব্যাংক পরিচালনায় সুশাসনের ঘাটতি দেখাই তবে তারা সুযোগ নিয়ে সমালোচনা শুরু করবেন। প্রশ্নের মুখে ফেলবেন আমাদের।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর অবশ্য জাগো নিউজকে বলেন, আমি চাইবো পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংকগুলো পরিচালনায় সহায়তা দেবে। সুশাসনের পথে চলবে। অন্যথায় পর্যবেক্ষক নিয়োগে আমরা পিছপা হবো। সাম্প্রতিক সময়ে সেই নজির আমরা রেখেছি।
 
অন্য একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক টেলিফোনে জাগো নিউজকে বলেন, এভাবে চললে নতুন প্রজন্মের ব্যাংক হিসেবে আমাদের উপরেও গ্রাহকের আস্থার ঘাটতি তৈরি হবে। তারা আমানত রাখতে ভয় পাবে।

জানা যায়, একমাত্র ফারমার্স ব্যাংক ছাড়া আর্থিক সূচকে অনেকটা সঠিক পথেই রয়েছে বেসরকারি খাতের নতুন ব্যাংকগুলো। শাখার সংখ্যাও বেড়েছে। বেড়েছে আমানত। শুধু ফারমার্স ব্যাংক কার্যক্রম শুরুর আগে থেকেই নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছে। ব্যাংক কার্যক্রম শুরুর আগেই কার্যালয় ভাড়া বাবদ বিপুল অর্থ নিয়ে যান এর এক উদ্যোক্তা পরিচালক। পরে জরিমানা দিতে হয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে। টাকাও ফেরত আনতে হয়। এরপর বের হতে থাকে নিয়োগ নিয়ে নানা অনিয়মের কথা। সবশেষ প্রায় ৪০০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণে অনিয়ম পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এমন পরিস্থিতিতে সুশাসন আনতে গত বুধবার পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

২০১৩ সালে কার্যক্রম শুরু করে নতুন প্রজন্মেন ৯টি ব্যাংক। ব্যাংকগুলো হচ্ছে- মধুমতি, মিডল্যান্ড, সাউথ বাংলা, মেঘনা, ইউনিয়ন, ফার্মারস, এনআরবি লিমিটেড, এনআরবি কমার্শিয়াল এবং এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক।

সূত্র বলছে, নতুন প্রজন্মের ব্যাংকগুলোর অনুমোদন দেয়ার আগে প্রশ্ন ওঠেছিল, রাজনৈতিক বিবেচনায় অনুমোদন পাওয়া ব্যাংকগুলো ঠিক মত চলতে পারবে কি-না।

এসএ/এআরএস/একে/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।