পার্বত্য শান্তিচুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হবে: ইনু


প্রকাশিত: ০১:২২ পিএম, ১৪ জানুয়ারি ২০১৬

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হবে। এ নিয়ে সন্দেহের কোনো কারণ নেই। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় আন্তরিক ও দায়িত্বশীল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সেই লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছে সরকার। বৃহস্পতিবার রাঙামাটিতে আয়োজিত পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শান্তিচুক্তি করেছেন। এ চুক্তি পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারী সব জনগোষ্ঠী মানুষের জন্য শান্তির ছাতা। শান্তির সেই ছাতা খোলা রেখে ধরে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার তলে শান্তির ছায়ায় বসে পার্বত্যবাসী সবাইকে স্থায়ীভাবে শান্তির পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে।

htdb-Rally
তথ্যমন্ত্রী বলেন, শান্তিচুক্তির ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। উন্নয়নের এই ধারাকে এগিয়ে নিতে শান্তিচুক্তিকে পূর্ণাঙ্গরূপে কার্যকর করতে হবে। এ লক্ষ্যে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করে যেতে হবে। শান্তিচুক্তির মালিক একপক্ষে যেমন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঠিক অন্যপক্ষে সন্তু লারমাও। তাই উভয় পক্ষকে একমত হয়ে চুক্তিকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিয়ে কার্যকর করতে হবে।

তিনি বলেন, শান্তিচুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে যেমন দরকার কিছু সময়ের, পাশাপাশি এর রয়েছে বিভিন্ন প্রশাসনিক ব্যাপার ও সমস্যা। এগুলো সমাধান করেই শান্তিচুক্তির পূর্ণাঙ্গ রূপে কার্যকর করতে হবে। সেজন্য শান্তিচুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নে সরকারের যেমন চ্যালেঞ্জ রয়েছে, ঠিক তেমনি চুক্তির প্রতি সবাইকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন দিতে হবে। এ নিয়ে সংলাপের মাধ্যমে সব বিরোধ ও সংশয় দূর করতে হবে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, শান্তিচুক্তি রাষ্ট্র করেছে। এ চুক্তি রাষ্ট্রের। তাই এ চুক্তি বানচালে হাত দেয়ার কারও কোনো ক্ষমতা নেই। বেগম খালেদা জিয়া চুক্তির বিরোধিতা করেছিলেন কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে বাতিল করতে পারেননি। পরবর্তী মঈন-ফকরুউদ্দিনের সরকারকেও শান্তিচুক্তি মেনে চলতে হয়েছে। তাই শান্তিচুক্তিকে রক্ষার জন্য সবাইকে একমত হয়ে একযোগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ শুধু বাঙালিদের জন্য নয়। এদেশে বসবাসরত সব জাতিগোষ্ঠীর মানুষের। সংবিধানে সবার অধিকার সংরক্ষিত। তবে সংরক্ষিত অধিকার বাস্তবায়ন ও উন্নয়নে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের জন্য দরকার একটি পৃথক আইন এবং একটি কমিশন। যাতে করে তাদের উন্নয়নে যেভাবে কাজ করা দরকার সেভাবে করা যায়। সরকারের কাছে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।  

chtdb-Rally       
দুপুর একটায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নববিক্রম কিশোর ত্রিপুরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান র.আ.ম উবায়দুল মুক্তাদির চৌধুরী, খাগড়াছড়ির এমপি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, নারী সাংসদ ফিরোজা বেগম চিনু।

এছাড়া রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজুরী চৌধুরী, রাঙামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সানাউল হক পিএসসি, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান তরুণ কান্তি ঘোষসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শুরুতে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন প্রধান অতিথি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। পরে শিশুদের নৃত্য পরিবেশন এবং চল্লিশ পাউন্ড ওজনের কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী। এছাড়া সকালে মাউন্টেনবাইক প্রতিযোগিতা, শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।

সুশীল প্রসাদ চাকমা/এমজেড/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।