মিঠুনের গোলে মালয়েশিয়ার সঙ্গে ড্র করলো বাংলাদেশ
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের গত আসরে মালয়েশিয়ার কাছে দু’দফা হেরেছিল বাংলাদেশ। একবার গ্রুপ পর্বে। অন্যবার ফাইনালে। এবারও গ্রুপ পর্বে মালয়েশিয়ানদের মুখোমুখি। প্রতিশোধ নেয়ার দারুন একটা সুযোগ পেয়েছিল মামুনুলরা। তবে সেটা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হলো মারুফুল হকের শিষ্যরা। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শিরোপা প্রত্যাশী দলটির সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করলো বাংলাদেশ। প্রথমে পিছিয়ে পড়লেও মিঠুন চৌধুরীর গোলে ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্বাগতিকরা।
শুরু থেকেই আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণে পরিপূর্ণ ছিল বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া ম্যাচটি। প্রথমার্ধে দুর্দান্ত খেলা উপহার দিয়েছিল দু’দল। শুধু হলো না গোলটিই। তবে দ্বিতীয়ার্ধে এসে পাল্টে যায় ম্যাচের চেহারা। খেলার ৫৫ মিনিটে প্রথমে মালয়েশিয়া গোল দিয়ে এগিয়ে যায়। এরপর ৭৭ মিনিটে মোহাম্মদ মিঠুন সেই গোলটি শোধ করে পরাজয় থেকে রক্ষা করেন বাংলাদেশকে।
শেষ পর্যন্ত, খেলার ৯০ মিনিট শেষে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই মাঠ ছাড়তে হলো বাংলাদেশ এবং মালয়েশিয়াকে। দুই ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের পয়েন্ট ৪। একই গ্রæপে নেপালেরও পয়েন্ট চার। যদিও গোল ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ। মালয়েশিয়ার পয়েন্ট ২। আগের ম্যাচেও নেপালের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছিল তারা। দুই ম্যাচ হেরে শ্রীলংকার বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে আজ বিকালেই। সেমির লড়াইয়ে এখন টিখে থাকল বাংলাদেশ, নেপাল এবং মালয়েশিয়া। আগামী শুক্রবারই নির্ধারিত হবে সেমির সমীকরণ।
খেলার শুরুতে কোনো দলই সফল আক্রমণ করতে পারেনি। দু’দলই একাধিক ভালো সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু সে সুযোগগুলো তারা হেলায় হারিয়েছে। প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকা বিপক্ষে শহিদুল আলম সোহেল গোলরক্ষকের দায়িত্বে থাকলেও মালয়েশিয়ার ম্যাচে ছিলেন আশরাফুল ইসলাম রানা। খেলার ৬ মিনিটেই রানার দৃঢ়তায় গোল হজম হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পায় বাংলাদেশ। বক্সের সামান্য বাইরে থেকে নেয়া জাইদানের ফ্রি-কিক বাম দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে রক্ষা করেন তিনি। ১৭ মিনিটে আবারো সুযোগ তৈরি করেন মালয়েশিয়ানরা। এবার ডিফেন্ডার নাসিরের কারণে বেঁচে যায় বাংলাদেশ।
গোলের সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশও ২০ মিনিটে উইঙ্গার জাহিদ হোসেনের শট ডিফেন্ডার নুর ফজলি কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন। পরের মিনিটে আবারো মালয়েশিয়ার বক্সে আক্রমণ বাংলাদেশের। এবার বাম প্রান্ত দিয়ে একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে ঢুকে পড়েন ডিফেন্ডার ইয়াসিন খান। বক্সের সামান্য বাইরে থেকে জাহিদের উদ্দেশ্যে উড়ন্ত ক্রস ফেলেন। সেই ক্রসে জাহিদ মাথা ছোঁয়ালেও বল মালয়েশিয়ার গোলবারের ওপর দিয়ে বাইরে চলে যায়।
প্রথমার্ধের ৩৮ মিনিটে আরো একটি সুযোগ নষ্ট করেন বাংলাদেশের স্ট্রাইকার নাবিব নেওয়াজ জীবন। গোলরক্ষককে অনেকটা একা পেয়েও বল জালে পাঠাতে পারেননি তিনি। মিনিট তিনেকের ব্যবধানে পাল্টা-আক্রমণ করে মালয়েশিয়া। বক্সের মাঝমাঝি থেকে নেয়া নুর ফাজলির শট গোলবারে লাগায় বেঁচে যায় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধে এসে খেলার গতি পরিবর্তণ করে ফেলে দু’দলই। কৌশলে পরিবর্তণ এনে অবশ্য শুরুতেই গোল আদায় করে নেয় মালয়েশিয়ানরা। ৫৫ মিনিটে ডান দিক থেকে আহমেদ সিয়ামিম ইয়াহইয়ার মাইনাস শট নেন। সেই মাইনাস থেকেই উড়ন্ত বলে দুর্দান্ত হেড করেন মুহাম্মদ হাদিন। সেটাই জড়িয়ে যায় বাংলাদেশের জালে।
গোল হজম করার পর মরিয়া হয়ে ওঠে স্বাগতিকরা। যার ধারাবাহিকতায় ম্যাচের ৭৭ মিনিটে মিঠুন চৌধুরী সমতায় ফেরান বাংলাদেশকে। ডান দিক থেকে জাহিদ হোসেনের ক্রসে বল পান মিঠুন। সেই বলে আলতো করে প্লেসিং শটে মালয়েশিয়ার জাল ভেদ করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলে সমতা নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশের ফুটবলাররা।
আইএইচএস/এএইচ/আরআইপি