কপাল খুলছে ১ হাজার ৩৫২ কম্পিউটার শিক্ষকের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৫১ এএম, ২১ ডিসেম্বর ২০১৫

দীর্ঘ চার বছর পরে কপাল খুলতে যাচ্ছে দেশের এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত এক হাজার তিনশ’ ৫২ জন কম্পিউটার (আইসিটি) শিক্ষকের।  নতুন বছরের শুরুতেই এসব শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র।

জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দ্বৈতনীতির কারণে এইসব শিক্ষকরা চাকরি পেয়েও দীর্ঘ দিনে এমপিওভুক্ত হতে পারেননি। ফলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করেছেন। অবশেষে এসব শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশের মাধ্যমিক স্তরে কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়। ২০১০ সালের জনবল কাঠামো অনুযায়ী কম্পিউটার শিক্ষা বিষয়টি প্যাটার্নভুক্ত করা হয়। সে অনুযায়ী কম্পিউটার শিক্ষকরাও জনবল কাঠামো অনুযায়ী প্যাটার্ন ভুক্ত শিক্ষক।

বিধি অনুযায়ী এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার বিষয়ে নিয়োগ পেলে স্বাভাবিক ভাবে এমপিওভুক্ত হবেন। কিন্তু ২০১১ সালের ১৩ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে কম্পিউটার শিক্ষকদের বিদ্যালয় থেকে বেতন ভাতা দেয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু দেশের অধিকাংশ এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অর্থ সংকটে ভুগছে।

তাই তাদের পক্ষে এসব শিক্ষকদের বিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে বেতন ভাতা পরিশোধ করা কঠিন ছিল। অপরদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের কারণে তারা চাকরি পেয়েও এমপিওভুক্ত হতে পারেননি। ফলে বেতনবিহীন মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়েছে কম্পিউটার শিক্ষকদের।

সুনামগঞ্জের হাজি কনু মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় সহকারী কম্পিউটার শিক্ষক মো. এনামুল হক বলেন, সরকারি বিধি মোতাবেক নিয়োগ পেয়ে বিদ্যালয়ের পাঠদানের পাশাপাশি নানা তথ্য, ফর্ম ফিলআপ, ডিজিটাল কনটেন্ট ডাউনলোড, আপলোড, মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করি। কিন্তু মাস শেষে শুন্য হাতে বাড়ি ফিরতে হয়। বিদ্যালয় থেকে বেতন ভাতা দেয়ার কথা থাকলেও অর্থ সংকটের কারণে কর্তৃপক্ষ দিতে পারছে না। ফলে আমাদের মা বাবা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করচ্ছি।

তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন চাকরি করার পরেও এমপিওভুক্ত না হওয়ায় একই প্রতিষ্ঠানে এমপিওভুক্ত সহকর্মীরা ‘ডিজিটাল শিক্ষক’ নামে আমাদের কটাক্ষ করছে। এতে সামাজিক ভাবেও হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছি। অথচ সরকারের ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নে আইসিটি শিক্ষার বিকল্প নেই। ২০১১ সালের ১৩ নভেম্বরের প্রজ্ঞাপণ বাতিল করে এমপিওভুক্তির দাবি জানান তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু এনামুল হকই মানবেতর জীবন যাপন করছেন না। এই তালিকায় রয়েছেন  গোপালগঞ্জ জেলার সুকতাইল ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের জীবেশ বাড়ৈ, রাঙ্গমাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার রূপালি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিকাশ চাকমা, কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার মহেশপুর আজিজিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সামসুন নাহারসহ আরো প্রায় হাজারো শিক্ষক।

মাউশির সহকারী পরিচালক (মাধ্যমিক-২) এএসএম আব্দুল খালেক জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ২০১১ সালের ১৩ নভেম্বরের পরে কম্পিউটার বিষয়ে অনুমোদন প্রাপ্ত এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এমপিওবিহীন কম্পিউটার শিক্ষকদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এতে ভোলা জেলা ছাড়া ৬৩টি জেলার সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয় এক হাজার তিন শ’ ৫২ জনের একটি খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এসব শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করার জন্যই তালিকাটি করা হয়েছে বলে জানান তিনি ।

এনএম/এসকেডি/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।