মেধাবী ছাত্রী থেকে আইএস জঙ্গি
পাকিস্তানের মুলতানের বাহাউদ্দিন জাকারিয়া (বিজেড) ইউনিভার্সিটির ফার্মাসি বিভাগের ছাত্রী তাশফিন মালিক। এই তাশফিনকে এখন বিশ্ববাসী চেনে ক্যালিফোর্নিয়ার বন্দুকধারী হিসেবে। গত বুধবার একটি প্রতিবন্দী সেবাকেন্দ্রে সে ও তার স্বামী রিজওয়ান ফারুকের হামলায় ১৪ জন নিহত হয়। মেধাবী শিক্ষার্থী থেকে মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লেন কীভাবে কখনোই বুঝতে পারেননি তার সহপাঠিরা।
তাশফিনের সহপাঠী ফারহান সিদ্দিক বলেন, ও খুব ভাল ছাত্রী ছিল। ক্লাসে কোনও লেকচার মিস করতো না। আমরা কোনও ক্লাস মিস করলে তার কাছ থেকে টুকে নিতাম। সে সারাক্ষণ নোট তৈরি করতো। আমরা তার নোট পড়তাম।
২৭ বছর বয়েসী ফারহান ২০০৭ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বিজেড ইউনিভার্সিটিতে তাশফিনের সাথে একই সাথে ফার্মা ডি (ডক্টর অব ফার্মাসি) অধ্যয়ন করেছেন। ফারহান বলেন, তাশফিন আপাদমস্তক বোরকায় মুড়ে ক্লাসে আসতো। ৫ বছরে তার চোখ ছাড়া আর কিছুই দেখতে পায়নি কেউ। সে ছিল স্বল্পভাষী। নিচু কণ্ঠে কথা বলতো। তার উপর ভাল ছাত্রীর খ্যাতি। সব মিলিয়ে ক্লাসের সবার সুনজরে ছিল সে।
গত বুধবার তাশফিন ও তার স্বামী রিজওয়ান ফারুক একটি প্রতিবন্দী সেবাকেন্দ্রে হামলা চালায়। এতে ১৪ জন নিহত হয়। পরবর্তীতে পুলিশের গুলিতে মারা যায় তাশফিন ও রিজওয়ান। পরে তাশফিনের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে জানা যায়, বাহাউদ্দিন জাকারিয়া (বিজেড) ইউনিভার্সিটির সাবেক এই শিক্ষার্থী ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠীর প্রতি আনুগত্য স্বীকার করেছিল।
তার সহপাঠী ফারহান বিবিসি বলেন, তারা যখন জানতে পারেন তাদের তাশফিনই ক্যালিফোর্নিয়ার বন্দুকধারী তখন তারা বিস্মিত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, যে তাশফিনকে আমরা চিনি যার সাথে আমাদের দীর্ঘ ৫ বছর কেটেছে তাকে কখনো এমন দেখিনি আমরা। কিন্তু গণমাধ্যমে যখন বিস্তারিত তথ্য আসতে শুরু করলো, তখন তারা মিলিয়ে দেখেন এই বন্দুকধারী তাশফিনই তাদের সেই সহপাঠী।
মুলতানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র এবং ছাত্রীদের মধ্যে খুব একটা বন্ধুত্ব হবার চল নেই। ছেলে মেয়ে কথাবার্তা হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। ফলে তাশফিনের সাথেও ফারহানের কথাবার্তা আলোচনা ছিল সীমিত পরিসরেই।
এসআইএস/এআরএস