ম্যাডাম দেশে ফিরলেই কমিটির নাম ঘোষণা হবে


প্রকাশিত: ০৩:৪৮ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০১৫

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দেশে ফিরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটিকে পূর্ণাঙ্গ করাসহ গুরুত্বপূর্ণ সব ইউনিটের কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান। সম্প্রতি জাগো নিউজকে তিনি জানিয়েছেন, নিয়ম অনুযায়ী যেহেতু দলের অনুমোদন প্রয়োজন হয় তাই অপেক্ষায় রয়েছি। কমিটি গঠন পক্রিয়ার সব কাজ ইতোমধ্যে আমরা শেষ করেছি।

তিনি জানান, কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি), জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), ঢাকা মহানগর কমিটি একসঙ্গে ঘোষণা করা হবে। প্রথমে হাইকমান্ড থেকে ঢাকার দুটি কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। আমরা সেভাবে করে দিয়েছি। পরবর্তী (পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ) চারটি কমিটি জমা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমরা সেভাবেও কমিটি জমা দিয়েছি।

অভিযোগ আছে, নানা অজুহাতে কমিটি বিলম্ব হচ্ছে এতে আপনাদের ব্যর্থতা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমিটি বিলম্ব হওয়ার পেছনে আমাদের ব্যর্থতাও ধরে নিতে পারেন।

বলা হচ্ছে আন্দোলনকে চাঙ্গা করতেই মূলত বিএনপি চেয়ারপারসন পরীক্ষিত নেতাদেরকে দিয়ে কমিটি গঠন করেছেন। আপনারা কি সে কাজটা করতে পেরেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শতভাগ দায়িত্ব পালন করতে না পারলেও অাশা করি যারা আমাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছেন তারা মানসিক সন্তষ্টিতে রয়েছেন। কারণ আমি মনে করি তারা আমাদেরকে দায়িত্ব দিয়ে ভুল করেননি। গত আন্দোলনে আমাদেরকে যেভাবে দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল আমরা সেভাবে কাজ করতে পেরেছি। বিষয়টি দলের হাইকমান্ড জানে।

গত এক বছরে আপনাদের সফলতা কি- জানতে চাইলে আকরামুল হাসান বলেন, আন্দােলনে সামনে থেকেই আমরা আমাদের কাজগুলো করতে পেরেছি। বিএনপির সামনের কাতারে থেকে যে ভূমিকাটা পালন করার কথা ছিল তা আমরা করেছি। আপনি হয়তো বলতে পারেন বড় বড় মিছিল দেখা যায়নি। তবে যেখানে যেভাবে থাকার কথা ছিল আমরা থেকেছি। ভ্যানগার্ড হিসেবে থেকেই আন্দােলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে ছাত্রদল।

আপনারা বলছেন, দেশে গণতান্ত্রিক সংকট চলছে, এ সংকট উত্তরণ কিভাবে করবেন? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে যে গণতান্ত্রিক সংকট চলছে তা উত্তরণে আমি শতভাগ অাশাবাদী। বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রকামী। সরকার স্বৈরাচারী কায়দায় যেভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে জনগণ তাদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ফলে ভোটের মাধ্যমে তারা তাদের জয় নিশ্চিত করতে পারছে না। স্থানীয় নির্বাচন থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচনেও তাদেরকে ভোট কারচুপি করতে হচ্ছে। ভোট ডাকাতি করতে হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, টাঙ্গাইলের নির্বাচনে সরকার পরাজিত হবে এই ভয়ে নির্বাচনই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। স্বৈরাচারী সরকারের নানা অত্যাচারের প্রতিবাদে শুরুর দিক থেকেই শান্তিকামী জনতা প্রতিবাদী হয় না। সময় লাগবে। মিয়ানমারে অগণতান্ত্রিক সরকার পরাজিত হয়েছে। সময় কতদিন লাগবে তা জানি না। তবে সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাদের পতন অনিবার্য। তবে সেই দিন খুব বেশি দূরে নয়।

ছাত্রদলের বিরুদ্ধে সরকারের সঙ্গে আঁতাতের অভিযোগ উঠেছে, এ ঘটনার সত্যতা কতটুকু? এমন প্রশ্নের জবাবে ছাত্রদলের পরীক্ষিত এ নেতা বলেন, এ ধরনের কোন তথ্য আমার জানা নেই। তবে যদি কারো কাছে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য থাকে তাহলে তারা লিখতে পারে। আমার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানোর জন্য মুখোরোচক লেখা লিখলেও এসব বিষয়ে কোন সম্পৃক্ততা পাবে না। এ দেশে গোয়েন্দা সংস্থার কাছে কেউ গেলে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে কেউ ব্যালেন্স করলে কোনো কিছু অজানা থাকে না। পত্রিকায় না লিখলেও বিএনপিতে যেমন আওয়ামী লীগের সোর্স আছে, আবার আ. লীগেও বিএনপির সোর্স আছে।

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া তিন বারের প্রধানমন্ত্রী এমনি হননি। উনারও সোর্স আছে। উনাদের কাছে চলে আসে কারা কারা মিটিং করে। কােন দিক দিয়ে মিটিং করে ব্যালেন্স করে। সেক্ষেত্রে যদি এ ধরনের কোনো মিটিং করেও থাকি দলও জানবে আর মিডিয়ার কাছেও প্রমাণসহ চলে যাবে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এর আগেও আমার বিরুদ্ধে ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে অর্থ কেলেঙ্কারির দায় চাপানোর চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু সেই অভিযোগও মিথ্যা সেটা প্রমাণিত হয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে আমি এজন্য চিন্তা করি না কারণ ভেতরে দুর্বলতা থাকলে দুশ্চিন্তায় পড়ে যেতে হয়। দলিল প্রমাণ থাকলে যার যা ইচ্ছা লিখুক।

আপনাকে নিয়ে যে প্রত্যাশা ছিল তা কি পুরণ হয়েছে? এ বিষয়ে তিনি বলেন, যে দুসময় আমরা দায়িত্ব নিয়েছি। এখনো যে বাতি জ্বালিয়ে রাখতে পেরেছি সেটাই তো অনেক কিছু। বর্তমান পরিস্থিতিতে ভাইবার ছাড়া যোগাযোগ করা কঠিন হয়ে গেছে। রেগুলার নাম্বার ব্যবহার করে তো টিকে থাকা মুশকিল। আন্দােলন সংগ্রামে ছাত্রদল অগ্রভাগে থাকবে এটা নিয়ে কােন দ্বিমত নেই। দলের যে কোন কর্মসূচিতে বাস্তবায়নে অন্তত শ’ খানেক ইউনিটে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে বাতি আমরাই জ্বালিয়ে রেখেছি।

তিনি বলেন, দেখুন কোন ইউনিটের কমিটি আমরা দেইনি। টুকু আলিমের কমিটি নিয়ে আমরা চলছি। ব্যর্থতা আমাদেরও বলতে পারেন। আমরা নতুন করে দিতে পারিনি। জুয়েল হাবিব কমিটিও নতুন করে করতে পারেনি। এই কমিটিগুলো গিয়ার আপ করে করে কর্মসূচি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। নুর হোসেন দিবসে বিএনপি সিনিয়র কোনো নেতা অংশ না নিলেও ছাত্রদলের কয়েকশ’ নেতা অংশ নিয়েছে।

এমএম/এসএইচএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।