রূপগঞ্জে যুবদল-ছাত্রলীগ সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ আহত ৩৫


প্রকাশিত: ০১:৩৪ পিএম, ২৮ অক্টোবর ২০১৫

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে যুবদলের মিছিলে বাঁধা দেয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় যুবদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে সাংবাদিক ও পথচারীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন।

এসময় এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কে থাকা বিভিন্ন যানবাহন, মোটরসাইকেলসহ অন্তত ২০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে করে পুরো এলাকায় চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কে যানবাহন বন্ধ হয়ে গিয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। বুধবার দুপুরে উপজেলার গোলাকান্দাইল এলাকায় ঘটে এ সংঘর্ষের ঘটনা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, যুবদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে উপজেলার গোলাকান্দাইল এলাকায় স্থানীয় যুবদল নেতাকর্মীরা আলোচনা সভা ও আনন্দ মিছিলের আয়োজন করেন। দুপুর একটার দিকে আলোচনা সভা পূর্বে কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপুর নেতৃত্বে যুবদলের শত শত নেতাকর্মী এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কের গোলাকান্দাইল এলাকায় আনন্দ মিছিল বের করেন।

মিছিলে স্থানীয় ছাত্রলীগ বাঁধা প্রদান করেন। পরে উভয় পক্ষের কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী আহত হন। পরে যুবদল নেতাকর্মীরা বাইপাস সড়কে চলাচলরত প্রায় ৫ থেকে ৬টি ভারি যানবাহন ভাঙচুর করেন। সংঘর্ষ ও গাড়ি ভাঙচুরের ছবি তুলতে গেলে স্বাধীন সংবাদের সাংবাদিক শেখ সুমন হামলার শিকার হন। এসময় হামলাকারীরা তার কাছ থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়। এক পর্যায়ে মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপুর বাসভবনের সামনের সভাস্থলে যুবদল নেতাকর্মীরা চলে যান।

এদিকে, যুবদলের হামলায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন এমন সংবাদ পেয়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের শত শত নেতাকর্মী দেশীয় ও ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যুবদলের সভাস্থল এলাকায়  অবস্থান করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় যুবদল নেতাকর্মীরাও পাল্টা স্লোগান দিতে থাকেন। এতে উভয় পক্ষের মাঝে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। দুপুর ২টার দিকে  উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান সজীবের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা যুবদলের সভাস্থলে হামলা চালান। এসময় উভয় পক্ষের মাঝে ফের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সভাস্থলে থাকা বাসভবনসহ পাজেরো, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, সাংবাদিক জিন্নাত হোসেন জনির মোটরসাইকেলসহ ১৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। ওই এলাকা পুরো রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। দফায় দফায় সংঘর্ষে সাংবাদিক পথচারীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন।

খবর পেয়ে পুলিশের একাধিকদিল ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পুরোপুরি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের মধ্যে  যুবদল নেতা সালাউদ্দিন দেওয়ান, রাকিব হাসান, নুরবক্স, মমিন মোল্লা, নুর হোসেন, মাসুম মেম্বার, গোলজার হোসেন, আব্দুল আজিজ, কাউসার আহাম্মেদ, শাহজাহান, সজল, এলাহিজ, আরিফ, করিম মিয়া, রাসেল মিয়া, সুমন, ইকবাল হোসেন, মনির হোসেন, আবুল কালাম, জাহাঙ্গীর হোসেন, ইসহাক মিয়া, আজগর আলী, সোহাগ, ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হাসান সবুজ, সোলেয়মান, দেলোয়ার হোসেন, রাজু, সাকিল, মামুন, মনির হোসেন, আব্দুল আলী, আব্দুল্লাহকে স্থানীয় ও ঢাকাস্থ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান সজীব জাগো নিউজকে বলেন, যুবদল নেতাকর্মীরা মিছিল বের করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তি করে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন। এতে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী প্রতিবাদ করলে তাদের উপর হামলা চালানো হয়। এছাড়া অহেতুক বাইপাস সড়কে চলাচলরত বিভিন্ন প্রকার ভাড়ি যানবাহন ভাঙচুর করে। তাই তারা প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন।

এদিকে, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু বলেন, কোনো কিছু বোঝার আগেই যুবদলের শান্তিপূর্ণ আনন্দ মিছিলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। রূপগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

মীর আব্দুল আলীম/এমজেড/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।