মেডিকেলের প্রশ্ন ফাঁসে অত্যাধুনিক ডিভাইস
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ও পরীক্ষার্থীকে জানানোর জন্য সম্প্রতি চীন থেকে আনা হয় একটি অত্যাধুনিক ডিভাইস যা বসানো হয় ইউজিসির সহকারী পরিচালকের কক্ষে। এছাড়া অতি ক্ষুদ্র হেড ফোনও আনা হয়। যা কানে দিলে দেখে বোঝার কোনো উপায় নেই। কিন্তু পরীক্ষার্থী ঠিকই পরীক্ষার কক্ষ থেকে স্পষ্ট শুনতে পারবেন প্রশ্নের উত্তর।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর ইউজিসির কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সহকারী পরিচালক ওমর সিরাজসহ তিনজনকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।বিষয়টি তাৎক্ষনিকভাবে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন র্যাবের মিডিয়া উইং পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।
তখন তিনি জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ইউজিসির সহকারী পরিচালকসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
ইউজিসির সহকারী পরিচালক ওমর সিরাজ ছাড়াও বাকি দুজন হলেন, ২০১০ সালে এইচএসসি পাশ করা ছাত্র ইসহান ইমতিয়াজ (২২) ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) স্টোর কিপার রেজাউল করিম(৩২)।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আগারগাঁওস্থ ইউজিসির কার্যালয়ে ওমর সিরাজের কক্ষে তল্লাশি চালিয়ে প্রশ্নপত্রের সন্ধান ও আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) গোয়েন্দা শাখার প্রধান (পরিচালক) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদ।
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছিল। র্যাবও বিষয়টি জানার পর গোপনে কাজ করছিল। বৃহস্পতিবার রাতে জানতে পেরে আগারগাঁও এলাকায় তৎপরতা শুরু করে র্যািব।
আজকের ভর্তি পরীক্ষায় চারজনকে প্রশ্নপত্র দেয়ার কথা ছিলো তার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সহকারী পরিচালক ওমর সিরাজের নিজ কক্ষে প্রশ্নপত্র রয়েছে ও তিনি নিজেও জড়িত থাকার খবর নিশ্চিত হওয়ার পর শুক্রবার সকালে সেখানে অভিযান চালানো হয়।
ওই কক্ষ থেকে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার বেশি কিছু প্রশ্নপত্র পাওয়া গেছে। এছাড়া এর আগে ঢাকায় অনুষ্ঠিত জুডিশিয়াল পরীক্ষারও প্রশ্নপত্রসহ খাতা পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, ওমর সিরাজ র্যাবের কাছে মেডিকেলের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা নিজেই স্বীকার করায় তাঁকে আটক করা হয়েছে। আটক বাকি দুইজন প্রশ্নপত্র সমাধান করার কাজে নিয়েজিত ছিলো।
তবে এই ঘটনার সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে কারা কারা জড়িত থাকতে পারে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
র্যাবের মিডিয়া উইং পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ইউজিসির সহকারী পরিচালক সিরাজ প্রশ্নপত্র ফাঁসের কাজটি সহজে করার জন্য সম্প্রতি চীন থেকে একটি অত্যাধুনিক মেশিন এনেছেন। তা তিনি বসিয়েছেন নিজ কক্ষে। মেশিনটির কার্যকারিতা কি কি তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এব্যাপারে ইউজিসির উপসচিব মো. ওমর ফারুকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শুক্রবার অফিস বন্ধ থাকলেও র্যাবের অভিযানের খবর পেয়ে তারা অনেকেই ছুটে আসেন।
‘র্যাব আমাদের বা ইউজিসি’র কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেনি। ঘটনাটি আমাদের কাছে এখনও স্পষ্ট নয়। তারা সহকারী পরিচালক ওমর সিরাজের কক্ষে অভিযান চালাচ্ছে বলে জেনেছি।’
এর আগে মঙ্গলবার রাতে একই অভিযোগে মহাখালী ডিওএইচএস থেকে ৩৮ হাজার টাকা এবং ১ কোটি ২১ লাখ টাকার চেকসহ চারজনকে আটক করা হয়।
জেইউ/এএইচ/পিআর