বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৩ শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় মামলা
নওগাঁর মান্দা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অবহেলার কারণেই তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় নওগাঁর মান্দা উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী ইঞ্জি. আব্দুস সালাম বাদী হয়ে পাঁচজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যা এ ঘটনায় কোন আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে, এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর এ কমিটিকে সাত কার্য দিবসের মধ্যে রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় আশরাফুল ইসলাম ওরফে আসাব নামে এক ব্যক্তি পল্লী কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ১০ বছর আগে থেকে প্রায় ২৫০ মিটার দূরে মাদ্রাসাটির উপর দিয়ে অবৈধ বিদ্যুতিক লাইন টেনে তার ধানের বয়লার চালিয়ে আসছিলেন। মাদ্রাসাটি টিনের ছাউনি দেয়া দ্বিতলা বিশিষ্ট ভবন।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের চিৎকার শুরু করে। কিন্তু মাদ্রাসার প্রধান গেট তালাবদ্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করতে পরেনি স্থানীয়রা। পরে তালা ভেঙে শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
গণেশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জানান, মান্দা উপজেলার সতিহাট আদর্শ মহিলা হাফেজিয়া বহুমুখী মাদ্রাসা ও এতিমখানায় (শিশু সদন) আবাসিকটি ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে কুরআন শিক্ষার জন্য নিয়মিত পাঠদান দিয়ে আসছিলেন। ঘটনার সময় ওই মাদ্রাসায় প্রায় ১৬৯ জন শিক্ষার্থী ছিলো।
অভিযোগ করে তিনি আরো বলেন, রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়ক পেরিয়ে মাদ্রাসার টিনের ছাউনির ওপর দিয়ে মান্দা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে যোগসাজস করে অবৈধ সংযোগটি নেয়া হয়। যার কারণেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। তবে স্থানীয়রা অবৈধ এ সংযোগ নেয়া ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকেই তিন শিক্ষার্থী মৃত্যুর জন্যে দায়ী করছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুর রহমান খান জানান, ময়নাতদন্ত শেষে ওই তিন শিক্ষার্থীর মরদেহ পরিবারের স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এ সময় প্রত্যেক পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আমিরুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে সাত কার্য দিবসের মধ্যে রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
মান্দা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, অবৈধভাবে বৈদ্যুতিক লাইনে নেয়া সত্যতা পাওয়া গেছে। গত রাতেই বেশ কিছু অবৈধ বৈদ্যুতিক তার জব্দ করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আব্বাস আলী/এআরএ