রিভার ফ্রন্ট রোড মেরামতে পুকুর চুরির অভিযোগ
খুলনার লবণচরা থেকে পুটিমারী তিন কিলোমিটার সড়ক (রিভার ফ্রন্ট রোড) মেরামতে পুকুর চুরির অভিযোগ উঠেছে। ৮ কোটি ৬৭ লাখ টাকা মূল্যের এক সড়কটিতে সিডিউল অনুযায়ী ব্যবহার করা হচ্ছে না কোন সমাগ্রী। সড়কটি মেরামতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যত সম্ভব পারছেন নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করছে। ফলে সড়কটির স্থায়ীত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী।
সূত্র জানায়, খুলনার পাশ দিয়ে প্রবাহমান রূপসা নদীর পশ্চিম পাশের বেড়িবাঁধটি দীর্ঘদিন ধরেই চলাচলের অনুপযোগী থাকার পর ২০১৪ সালের ১৪ মে থেকে এর মেরামত কাজ শুরু হয়। জার্মান ডেভলামেন্ট কো-অপারেশনের অর্থিক সহযোগিতায় খুলনা সিটি কর্পোরেশন এই প্রকল্প বাস্তাবায়ন করছে। কেসিসি প্রকল্পটি বাস্তাবয়নের জন্য জামিল ইকবাল (জেভি) এবং কামরুল ইসলামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ করে।
বর্তমানে সড়কটির প্রায় ৬০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, সড়কটিতে শতভাগ পিচ ব্যবহার করার কথা সিডিউলে উল্লেখ থাকলেও তা করা হয়নি। বালি ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কার্পেটিং এর উপর বালি ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া ইটের সলিং এর উপর থেকে যথাযথভাবে মাটি ও ময়লা অপসারণ না করেই তার উপর দিয়ে কার্পেটিং করা হচ্ছে। রাস্তাটির যে অংশ সম্পন্ন করা হয়েছে সে অংশের পাশ থেকে কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে একটু চাপ লাগলেই।
সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি করা হয়েছে রাস্তার পাশ বাঁধাইয়ের কাজে ব্যবহৃত কর্বোস্টোন (ব্লক) নির্মাণের কাজে। এই ব্লক নির্মাণে সিলেটের বালি ব্যবহার করার কথা থাকলেও ব্যবহার করা হয়েছে স্থানীয় ধুলাবালী। অাধা ইঞ্চি আমদানি করা কালো পাথর ব্যবহার করার কথা থাকলেও ব্যবহার করা হচ্ছে সাদা পাথর। তাছাড়া একটি সিমেন্টের সাথে দেড় ব্যাগ বালি এবং তিন ব্যাগ পাথর ব্যবহার করার কথা থাকলেও এক ব্যাগ সিমেন্টের সাথে ৩/৪ টা বালি এবং ৫/৬ টি পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে ব্লকগুলো অত্যন্ত ভঙ্গুর হয়ে আছে।
সূত্র জানায়, ব্লক নির্মাণে কালো পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে না এমন অভিযোগ এলাকাবাসী করার পর সাদা পাথরের সঙ্গে সামান্য কালো পাথর ব্যবহার করা হচ্ছে।
তবে সিটি করপোরেশনের এলজিইডি শাখার সেকশন অফিসার (কাজের তদারকি কর্মকর্তা) মনোয়ার হোসেন বলেন, সব কিছু ঠিকমতো ব্যবহার করা হচ্ছে। কার্বোস্টোন তৈরিতে সিলেটের বালির চেয়ে কুষ্টিয়ার বালি ভালো তাই ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, কোথাও কোন অনিয়ম করা হচ্ছে না। কার্পেটিং এর উপর বালি ব্যবহারের বিষয়ে তিনি সন্তোষজনক উত্তর না দিয়ে বলেন, রাস্তা ঠাণ্ডা রাখতে বালি ব্যবহার করা হয়েছে। এ বিষয়ে কোন নিষেধ নেই।
এ ব্যাপারে খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, আমি বেশ কয়েকদিন কাজের খোঁজ খবর নিতে পারিনি। তবে আজ কালের মধ্যেই খোঁজ নেবো।
আলমগীর হান্নান/এসএইচএস/পিআর