অভিজিত হত্যার আলামত এফবিআইকে হস্তান্তর
বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও ব্লগার অভিজিত রায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সংগৃহীত আলামত তদন্ত করতে আসা আমেরিকান তদন্ত সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) কাছে হস্তান্তর করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
বুধবার দুপুরে এই আলামত হস্তান্তর করা হয় বলে জানিয়েছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম। ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
তিনি বলেন, বিজ্ঞান লেখক ও ‘মুক্তমনা’ ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা প্রবাসী অভিজিত রায় আমেরিকারও নাগরিক। এ কারণে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত করতে আসে এফবিআই।
তিনি বলেন, অভিজিত হত্যাকাণ্ডের সংগৃহীত আলামত বুধবার দুপুরে এফবিআই প্রতিনিধি দলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এফবিআই আমেরিকার ল্যাবে এই আলামত পরীক্ষা নিরীক্ষা করবে।
মনিরুল ইসলাম বলেন, এর আগে এফবিআই প্রতিনিধি দলের সাথে আমাদের একাধিককার দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়েছে। তথ্য আদান প্রদান হয়েছে। এফবিআই আমাদের কাছে অভিজিত হত্যার আলামত চেয়েছিল। তবে আলামত দিতে আদালতের অনুমতির প্রয়োজন ছিল। আদালতের অনুমতি সাপেক্ষেই বুধবার আলামত এফবিআইয়েরে কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে এফবিআইয়ের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অভিজিৎ হত্যা মামলা তদন্তের সঙ্গে যুক্ত ডিবির কর্মকর্তাদের সঙ্গে তারা বৈঠক করে। এতে ডিবির ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত এ বৈঠক চলে।
এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি মোড় ও বইমেলা সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শন করে চার সদস্যের এফবিআই দলটি। ডিবির সঙ্গে কয়েকদফা বৈঠকের পর এফবিআই পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা সিআইডির সাথেও বৈঠক করে।
ডিবি ও সিআইডির সাথে বৈঠকের পর জানা গেছে, যারা ফেসবুক ও ব্লগে অভিজিতকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন, তাদের খুঁজে বের করার জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে এফবিআই।
উল্লেখ্য, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক ৯টার দিকে ‘মুক্তমনা’ ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা ব্লগার ও লেখক প্রকৌশলী ড. অভিজিত রায় ও তার স্ত্রী ব্লগার রাফিদা আহমেদ বন্যাকে টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ৩নং গেটের সামনে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে জখম করে।
গুরুতর আহতবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর রাত সোয়া ১০টার দিকে মারা যান অভিজিত। আমেরিকা যাওয়ার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত রাফিদা ঢামেক থেকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন।
ব্লগার ও লেখক অভিজিত খুনের পর থেকেই দেশের সাধারণ জনগণসহ আন্তর্জাতিক মহল এর নিন্দা ও উদ্বেগ জানায়। অভিজিত নিহতের ঘটনায় গণমাধ্যমে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা হয়।
জেইউ/বিএ/এমএস