সপ্তাহের রসালাপ: মেঠো ইঁদুরের শহুরে হওয়ার শখ
রাস্তায় যেতে যেতে এক মেঠো ইঁদুরের শহর থেকে আসা তার বন্ধুর সঙ্গে দেখা হয়ে গেলো। শহুরে বন্ধুকে দেখে তো মেঠো ইঁদুর খুবই খুশি। শহরের বাতাস লেগে বন্ধু যেন বেশ স্বাস্থ্যবান হয়েছে। চলাফেরা, কথাবার্তাও কেমন যেন শহুরেভাব।
মেঠো ইঁদুর বন্ধুর সঙ্গে এতোকাল পড়ে দেখা এজন্য তাকে বাড়িতে দাওয়াত দিতে ভুললো না। মেঠো ইঁদুর বাস করত এক মাঠে। নির্দিষ্ট দিনে শহুরে সেই ইঁদুর তার মেঠো বন্ধুর বাড়িতে দাওয়াত খেতে এলো।
মেঠো ইঁদুর তার বন্ধুর যত্নআত্তির কোনো ত্রুটি করলো না। সে তার বন্ধুকে খেতে দিল মটর ও গমের দানা। অনেক কষ্ট করে সে তার বন্ধুর জন্য এগুলো জোগাড় করেছে। সচারচার সে এতো ভালো খাবার খেতে পায় না। কিন্তু কি আর করা বন্ধুকে দাওয়াত করেছে। তাও আবার শহর থেকে আসা বন্ধু। সেখানে সে না জানি কত ভালো ভালো খাবার খায়। তা তাকে দেখলেই বোঝা যায়।
শহরের ইঁদুর একটু খুঁটে খেয়েই মুখ বিকৃত করে ফেললো। এটা দেখে মেঠো ইঁদুর জিজ্ঞাসা করলো কি হয়েছে বন্ধু?। শহরের ইঁদুর বললো, তোমার খাবার এতোই অপুষ্টিকর বলেই তুমি এমন রোগা। চলো তুমি আমার সঙ্গে শহরে চলো। সেখানে গিয়ে দেখবে আমরা কীভাবে থাকি।
মেঠো ইঁদুর তো বন্ধুর কাছ থেকে এই প্রস্তাব পেয়ে খুবই খুশি। আনন্দ করতে করতে তখন মেঠো ইঁদুর চলল শহুরে ইঁদুরের সঙ্গে। কয়েকদিনের যাত্রা শেষে তারা পৌঁছে গেলো শহুরে ইঁদুরের বাড়িতে। সে মস্ত বড় এক বাড়িতে থাকে। দেখেই তো মেঠো ইঁদুরের চোখ ছানাবড়া হয়ে গেলো।
মনে মনে মেঠো ইঁদুর তার বন্ধুকে কিছুটা হিংসা করলেও তাকে এখানে আনার জন্য ধন্যবাদ দিতে থাকলো। এবার তো শহুরে ইঁদুরের আপ্যায়নের পালা। রাতের জন্য তারা মেঝের নিচে অপেক্ষা করল। লোকেরা এসে খেয়ে চলে গেল। তখন শহুরে ইঁদুর তার বন্ধুকে খাবার ঘরে নিয়ে চলল এক গর্ত দিয়ে। তারা দুজনেই চড়ে বসল টেবিলের উপর। সাধারণ মেঠো ইঁদুর জীবনে কখনো এমন ভালো খাবার চোখেও দেখেনি।
সে বলল, তুমি ঠিক বলেছ, আমাদের জীবন খুবই খারাপ। আমি শহরে বাস করতে চলে আসব। একথা বলতে না বলতেই টেবিল কেঁপে উঠল। আর দরজা দিয়ে মোমবাতি হাতে নিয়ে ইঁদুর ধরতে লোক ঢুকল ঘরে। তারা কোনোক্রমে গর্তে ঢুকে নিজেদের বাঁচাতে পারলো।
এমন অবস্থা দেখে মেঠো ইঁদুর বললো, না বাবা আমার শহরের ভালো খাবারের দরকার নেই। সারাক্ষণ প্রাণ হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর চেয়ে আমার মাঠে বাস ঢের ভালো। সেখানে এমন মিষ্টি খাবার নেই ঠিকই, তবে এমন ভয়ের কোনো কারণও নেই।
লেখা: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত
প্রিয় পাঠক, আপনিও অংশ নিতে পারেন আমাদের এ আয়োজনে। আপনার মজার (রম্য) গল্পটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়। লেখা মনোনীত হলেই যে কোনো শুক্রবার প্রকাশিত হবে।
কেএসকে/জিকেএস