বীরবলের হাসির ঘটনা: ভালো মানুষ খোঁজা
দুপুরের খাওয়ার শেষ করার পড়, সম্রাট আকবর বিশ্রাম করছেন। সঙ্গেই আছে বীরবল। সম্রাট বীরবলকে জিজ্ঞাসা করলেন- আচ্ছা বীরবল বল তো, এই পৃথিবীতে কাদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, যারা চোখে দেখে অর্থাৎ ভালো মানুষ নাকি অন্ধদের?
সম্রাট এই সময়ে আপনার প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়, কিন্তু আমার মনে হয় পৃথিবীতে ভালো মানুষের চেয়ে অন্ধের সংখ্যা বেশি হবে।
সম্রাট বললেন, উঁহু এভাবে বললে হবে না, তোমাকে তোমার কথার ভিত্তিতে যুক্তি উপস্থাপন করতে হবে। বীরবলও সম্রাটের এই কথা স্বীকার করে নিলেন।
পরের দিন বীরবল দুইজন রাজকর্মচারীকে নিয়ে বাজারে চলে গেলেন। সেখানে একটি জায়গায় বসে তিনি জাল বুনতে লাগলেন। দেখতে দেখতে সেখানে ভিড় জমে গেল। সবাই দেখতে উৎসুক হয়ে গেল যে, কীভাবে জাল বোনা হয়! সেখানে উপস্থিত ব্যক্তিরা বীরবলকে জিজ্ঞাসা করতে লাগলেন- বীরবল তুমি এটা কি করছ?
বীরবলের কাছে থাকা দুইজন রাজকর্মচারী, যারাই বীরবলকে এই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করছে তাদের নাম লিখে নিতে লাগল। এই কথা পাঁচকান হতে হতে রাজার কানেও গিয়ে পৌঁছালো। এই কথা শোনামাত্রই সম্রাট দলবল নিয়ে বাজারে বীরবলের কাছে চলে এলেন এবং বীরবলকে সেই একই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলেন- “বীরবল তুমি এটা কি করছ?
এটা শুনে বীরবল, তার সঙ্গে থাকা একজন রাজকর্মচারীকে নির্দেশ দিলেন বাদশাহের নামও সেখানে লিখে নিতে। এটি শুনে বাদশাহ, সেই কর্মচারীটির হাত থামিয়ে দিয়ে সেই কাগজটি নিয়ে নিলেন। সম্রাট দেখলেন, সেই কাগজটির উপরে লেখা আছে অন্ধ লোকেদের নামের তালিকা।
এরপর সম্রাট আকবর আগ্রহ বশত জিজ্ঞাসা করলেন- এই লিস্টে আমার নাম কেন লিখতে বললে? এরপর বীরবল বললেন- সম্রাট, আপনি দেখলেন যে, আমি জাল বুনছি, কিন্তু তবুও আপনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন যে আমি কি করছি?
এরপর বাদশাহ অপর কর্মচারীর হাত থেকে আরেকটি কাগজ নিলেন, দেখলেন সেখানে শিরোনামে লেখা আছে- দৃষ্টিশক্তি যুক্ত লোকেদের নামের তালিকা। কিন্তু সেখানে একজন ব্যক্তিরও নাম নেই।
এরপর বীরবল বললেন- “সম্রাট, এবার তো আপনি বিশ্বাস করবেন যে, পৃথিবীতে অন্ধ মানুষের সংখ্যাই বেশি!”
লেখা: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত
প্রিয় পাঠক, আপনিও অংশ নিতে পারেন আমাদের এ আয়োজনে। আপনার মজার (রম্য) গল্পটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়। লেখা মনোনীত হলেই যে কোনো শুক্রবার প্রকাশিত হবে।
কেএসকে/এএসএম