বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মাসের প্রথম দিনে ভোগান্তিমুক্তভাবে বেতন-ভাতা দিতে ইলেকট্রিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) চালু করেছে সরকার। তবে এ পদ্ধতিতে জটিলতার কারণে এখনো ডিসেম্বর মাসের বেতন তুলতে পারেননি প্রায় দুই লাখ শিক্ষক। বেতন না পেয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।
Advertisement
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশি বলছে, দ্বিতীয় ধাপে চলতি সপ্তাহে ৬৭ হাজার শিক্ষক ইএফটিতে বেতন পাাবেন। তারপর তৃতীয় ধাপে বাকি ১ লাখ ২৪ হাজার শিক্ষককে বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে ছাড় হলেও তা রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি ব্যাংকের মাধ্যমে ‘অ্যানালগ’ পদ্ধতিতে ছাড় হতো। বেতনের টাকা তুলতে শিক্ষকদের নানান ভোগান্তিতে পড়তে হতো। এ ভোগান্তি কমাতে ইএফটিতে বেতন-ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
বেসরকারি স্কুল-কলেজের তিন লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। তাদের মধ্যে তিন লাখ ৮০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্য যাচাই করে মাউশি। এরপর গত ১ জানুয়ারি ইএফটির কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। প্রথম ধাপে এক লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষককে বেতন দেওয়া হয়।
Advertisement
আরও পড়ুন
ইএফটিতে দ্বিতীয় ধাপে বেতন পাচ্ছেন ৬৭ হাজার এমপিওভুক্ত শিক্ষকদ্বিতীয় ধাপে ৬৭ হাজার শিক্ষকের বেতন পাওয়ার কথা ছিল ১৫ জানুয়ারির মধ্যে। তবে সার্ভার জটিলতাসহ নানান কারণে তা করতে পারেনি সরকার। এতে নতুন করে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন শিক্ষকরা।
নাটোরের বাগাতিপাড়া মহিলা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা তো আগেই ভালো ছিলাম। ইএফটি করতে গিয়ে মহাবিপদে পড়েছি। আমাদের প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন বেতন পেয়ে টাকা উত্তোলন করতে পেরেছেন। আর আমাদের কয়েকজনের টাকা ছাড়ের লিস্টে নাম এলেও অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা জমা হয়নি। ব্যাংকে গিয়ে ফেরত আসতে হয়েছে। বাকিদের তো কোনো খবরই নেই। চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে আমাদের।’
আরেক সহকারী অধ্যাপক শামীম সরকার বলেন, ‘আমরা শিক্ষক মানুষ। সামান্য এ বেতনের টাকা দিয়েই পরিবার-পরিজন নিয়ে চলি। মাসের ২৬ দিন পার হয়ে গেলেও আমরা বেতন পাইনি। কীভাবে চলবো বুঝতে পারছি না। প্রতিটি দিন বেতন পাওয়ার আশায় কাটাচ্ছি। বেতনের দেখা মিলছে না।’ শিক্ষকদের এ ভোগান্তি দ্রুত লাঘব করার দাবি জানান তিনি।
Advertisement
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্মসচিব (বাজেট) মোর্শেদা আক্তার বলেন, ‘দ্বিতীয় ধাপের বেতন-ভাতার অর্থছাড়ের সরকারি আদেশ (জিও) জারি হয়েছে। মঙ্গলবারের মধ্যে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনের অর্থ ব্যাংকে জমা হতে পারে। এরপর তারা টাকা তুলতে পারবেন।’
তবে ভিন্নকথা বলছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব (বাজেট) লিউজা-উল-জান্নাহ। তিনি বলেন, ‘শুধু জিও জারি হলেই শিক্ষক-কর্মচারীরা ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পারবেন বিষয়টি তেমন নয়। হিসাব নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে। সেখানে আনুষঙ্গিক কাজ শেষ হওয়ার পর শিক্ষকদের বেতন ব্যাংকে যাবে। এরপর তারা ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে পারবেন।’
এএএইচ/ইএ