বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তে হত্যার ঘটনায় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী যৌথভাবে তদন্ত করবে-এমন ঘোষণা সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আশাবাদের সৃষ্টি করবে। ঢাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) ৪২তম মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলন শেষে সোমবার সকালে সাংবাদিকদের এমন আশাবাদের কথা জানান বিজিবি মহাপরিচালক। সীমান্তে হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার জন্য বিজিবি ও বিএসএফ কাজ করছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এখন থেকে সীমান্তে হত্যাকাণ্ডসহ যে কোনো অপরাধমূলক ঘটনায় তদন্ত যৌথভাবে হবে। আগে দুই পক্ষ দুই ধরনের বক্তব্য দিত। কিন্তু এখন থেকে আর সে রকম কিছু হবে না। যৌথভাবে তদন্ত শেষে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। যে কোনো ঘটনায় বাংলাদেশ ও ভারতের সাংবাদিকরাও থাকবেন। তারা তাদের পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করবেন। সঠিক বিষয়টি তুলে ধরবেন। শুধু সিদ্ধান্ত নিলেই হবে না, সেটি যাতে বাস্তবায়ন হয় তার জন্যও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে উভয় পক্ষকেই। ভারত বাংলাদেশের বৃহৎ প্রতিবেশি দেশ। ভারতের সাথে বাংলাদেশের রয়েছে দীর্ঘ সীমান্ত। দুই দেশের সম্পর্কও ঐতিহাসিকভাবে অত্যন্ত প্রীতিময়। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক সীমান্ত হত্যা ঘটেই চলেছে। এ নিয়ে নানা সময় দুই দেশের পক্ষ থেকেই ঐকমত্যে পৌঁছা গেলেও সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। ভারতের সঙ্গে রয়েছে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান বাংলাদেশের মানুষ কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করে। সেই সম্পর্কের ধারাবাহিকতায় সাম্প্রতিক সময়ে দীর্ঘ কয়েক দশক ঝুলে থাকা সীমান্ত সমস্যারও সমাধান হয়েছে। এরই মধ্যে হয়েছে ছিটমহল বিনিময়ও। ছিটমহলবাসীর কয়েক দশকের দুঃখ দুর্দশার চির অবসান হয়েছে। তারা এখন স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে নিজ নিজ দেশেই গৌরবের সাথে বসবাস করছেন। এসব বিষয় দেশের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ককেই নির্দেশ করে। কিন্তু সীমান্ত হত্যা চলতে থাকলে সব অর্জনই আসলে ম্লান হয়ে যাবে। এ বিষয়টি ভারতকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে। নরেদ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার কানেকটিভিটির ওপর জোর দিচ্ছেন। সীমান্ত হত্যা চলতে থাকলে সেটি কী করে সম্ভব? এছাড়া সীমান্তের আচরণের মধ্য দিয়েই সম্পর্কের প্রকৃত অবস্থা বোঝা যায়। দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা এবং হত্যার বিষয়ে যৌথ তদন্তের যে সিদ্ধান্ত হয়েছে সেটি কেবল কথার কথা থাকবে না কার্যক্ষেত্রে বাস্তবায়ন হবে বলে আমরা আশা রাখছি। এ জন্য বৃহৎ প্রতিবেশি দেশ হিসেবে ভারতকেই এগিয়ে আসতে হবে সবার আগে।এইচআর/পিআর
Advertisement